রোহিঙ্গা ইস্যু : মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

SHARE

রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর দমন-পীড়নের ঘটনায় মিয়ানমারের ৪ সামরিক ও পুলিশ কমান্ডারসহ দুটো সামরিক ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

গত বছর রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের অভিযান শুরু হওয়ার পর শুক্রবার মার্কিন অর্থ বিভাগের আরোপ করা এ নিষেধাজ্ঞা সবচেয়ে কঠোরতম।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এ নিষেধাজ্ঞায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বকে টার্গেট করা হয়নি। এমনকি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ মানবতাবিরোধী অপরাধ বা গণহত্যা চালিয়ে এমন অভিযোগ করা থেকেও বিরত থেকেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, বর্তমান নিষেধাজ্ঞার তালিকায় জেনারেল পদমর্যাদার কর্মকর্তা থাকলেও মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা।

বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযানের বর্ষপূর্তিতে একটি মার্কিন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। সেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের নৃশংসতা নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এর বিবৃতি দেয়াকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপ নিল।

মিয়ানমারের বিকল্প নাম ব্যবহার করে মার্কিন অর্থ বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি ফর টেরোরিজম অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিগাল মানদেলকার বলেন, বার্মিজ নিরাপত্তা বাহিনী বার্মাজুড়ে জাতিগত সংখ্যালঘু কমিউনিটির বিরুদ্ধে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান, গণহত্যা, যৌন নির্যাতন, বিচার বহির্ভূত হত্যা এবং অন্যান্য মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে।

মানদেলকার বলেন, এ ধরনের ব্যাপক মানবিক দুর্ভোগের ঘটনায় জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলের অংশ হিসেবে অর্থ বিভাগ মিয়ানমার সেনাবাহিনী দুটি ইউনিট ও কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে।

সেনা কমান্ডার অং কিয়াও জও, খিন মাওং সোয়ে ও খিন হ্লেইং এবং বর্ডার পুলিশ কমান্ডার থুরা সান লুইন এবং ৩৩ এবং ৯৯ লাইট পদাতিক ডিভিশনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এ ব্যক্তিদের কোনো সম্পদ থাকলে তা ফ্রিজ, মার্কিনিদের তাদের সঙ্গে ব্যবসা করা এবং তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এর আগে গত জুনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানা যায়, এই দুই পদাতিক ডিভিশন রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু হলে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।