ইমারত হোসেন
মুশফিকুর রহিম একেকটা বাউন্ডারি মারেন আর পিনপতন নীরবতা নেমে আসে প্রায় ৩০ হাজার দর্শকে ঠাসা প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে। ডিস্ক জকি তাঁর সংগীতায়োজন বন্ধ রাখেন সাময়িক। নৈঃশব্দ্যও যে এতটা উপভোগ্য হয়, প্রেমাদাসায় না এলে বোঝা যেত না! সেটা অবশ্য বাংলাদেশিদের জন্যই।
ফ্লাডলাইটের আলোয় আলোকিত পুরো স্টেডিয়াম। অথচ কী আশ্চর্য অদৃশ্য আঁধার, প্রেমাদাসা ডুবে রইল সেই আঁধারে। জয়সূচক রানটা করে মুশফিক যখন ‘নাগিন’ হলেন, শ্রীলঙ্কানরা পারলে চোখ বুঁজে থাকে! মিরপুর কিংবা চট্টগ্রামে রেকর্ড গড়ে এমন একটা জয়ের পর নিশ্চিতভাবে পুরো স্টেডিয়াম হয়ে উঠত উৎসবের মঞ্চ। সেটি হয়নি তাতে কী, অনেক প্রশ্নের জবাব তো দেওয়া হয়েছে।
সমীকরণটা ছিল ৩ বলে ১ রান, আজও মুশফিক! কোনো ভুল হয়নি, মুশফিক শাপমোচন করলেন ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, বেঙ্গালুরুর সেই ম্যাচের। তারপর? খ্যাপাটে উদ্যাপন, সর্পনৃত্য…কত–কী! দ্যুতিময় ইনিংস, উদ্যাপন—কত কিছু জানার ছিল মুশফিকের কাছে। এ রাতে কিছুই জানা হলো না। বাংলাদেশের জয়ের নায়ক যে সংবাদ সম্মেলনে এলেন না। এলেন বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেওয়ার আরেক কারিগর তামিম ইকবাল।
এক ভারতীয় সাংবাদিকই জিজ্ঞেস করলেন, লর্ডসের ব্যালকনিতে সৌরভ গাঙ্গুলীর জার্সি ওড়ানো, ওয়েস্ট ইন্ডিজের গ্যাংনাম ক্রিকেটের আইকোনিক উদ্যাপন। মুশফিকও কি এমন কিছু করলেন? তামিম ভারি মজা পেলেন প্রশ্নটা শুনে, ‘আমাদের বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলামের উদ্যাপন এটা। ঘরোয়া ক্রিকেট বা বিপিএলে যখন সে উইকেট পায়, এই উদ্যাপনটা করে। এটা সাপের নাচ। খুবই মজার। মুশফিক ওটাই দেখিয়েছে। আমরা এটা খুব উপভোগ করি। নাজমুল যদি উইকেট পায়, দেখবেন, কীভাবে সে নাচে।’
৩৫ বলে ৭২ রানের যে দুর্দান্ত ম্যাচ জেতানো ইনিংসটা খেলেছেন মুশফিক, শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমাল বলেছেন, তাঁর দেখা মুশফিকের অন্যতম সেরা ইনিংস। আর তামিম ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না, কীভাবে স্তুতি করবেন সতীর্থের ইনিংসের, ‘মুশফিক অসাধারণ ব্যাটিং করেছে। ১০-১২ বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না। ও যদি আউট হয়ে যেত, তাহলে বলতে পারতাম, শেষ করে আসতে পারত। সবই তো ঠিক করেছে, কী বলব?’