মোটরসাইকেলের জন্য লংগদুর যুবলীগ নেতা হত্যা!

SHARE

মোটরসাইকেল ছিনতাই করে বিক্রি করতেই রাঙামাটির লংগদুর যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম নয়নকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে এ ঘটনায় জড়িত গ্রেফতার দুই যুবক।

তথ্যটি জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আহাম্মদ খান।গ্রেফতারকৃতরা হলেন জুনেল চাকমা (১৮) ও রুনেল চাকমা (৩৩)।
পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃতরা। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার বিকালের দিকে নয়নের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি মাইনি খাল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দিন ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
খাগড়াছড়ির এসপি আলী আহাম্মদ খান জানান, মোটরসাইকেলটি ছিনতাই করে বিক্রির উদ্দেশ্যে যুবলীগ নেতা নয়নকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে গ্রেফতার ওই দুই যুবক।
পুলিশ সুপার আলী আহাম্মদ খান জানান, ১ জুন খাগড়াছড়ি যাত্রীবেশে গ্রেফতারকৃত ওই দুই যুবক  দীঘিনালা-খাগড়াছড়ি সড়কের চার মাইল এলাকায় রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে নয়নকে হত্যা করে মোটরসাইকেলটি ছিনতাই করে।
পরে মোটরসাইকেলটি বিক্রি করতে না পেরে ৪ জুন রাতে দীঘিনালার মাইনী নদীতে ফেলে দেয়।
দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দিন ভূঁইয়া জানান, একাধিক সূত্র ধরে পরিচালিত অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য নিশ্চিত হওয়ায় শুক্রবার চট্টগ্রাম থেকে জুনেল চাকমাকে গ্রেফতার করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) দলের সদস্যরা।
পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শনিবার সকালের দিকে খাগড়াছড়ি সদরের কৃষি গবেষণা কেন্দ্র এলাকা থেকে রুনেল চাকমাকে গ্রেফতার করা হয়।
দীঘিনালা থানার ওসি আরও জানান, খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আলী আহম্মেদ খানের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয় শুক্রবার রাত ১১টার দিকে। পরে খাগড়াছড়ি সদরের কৃষি গবেষণা কেন্দ্র এলাকার একটি বাড়ি থেকে রুনেলকে গ্রেফতার করা হয়।
রুনেলের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলা সদরের বাবুছড়ায় এবং জুনেল চাকমার বাড়ি লংগদু এলাকায় বলে জানান ওসি শামসুদ্দিন ভূঁইয়া।
ওসি জানান, গ্রেফতারকৃত জুনেল চাকমা ও রুনেল চাকমা স্বীকারোক্তিতে জানায় নয়নকে হত্যার পর তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি দীঘিনালার মাইনি খালে ফেলে দেয়া হয়। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, চট্টগ্রাম থেকে নৌবাহিনীর ডুবুরি দল নিয়ে তল্লাশি চালিয়ে মোটর সাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা এখন খাগড়াছড়ির পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী অন্য আসামিদের ধরতে তাদেরকে নিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুন খাগড়াছড়ির দীঘিনালা সদরের চার মাইল এলাকা থেকে রাঙ্গামাটির লংগদু ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের লাশ উদ্ধার করে দীঘিনালা থানা পুলিশ।
নিহত নয়ন লংগদু উপজেলার সদরের বাইট্যাপাড়ার বাসিন্দা মৃত ফয়েজ আহম্মদের ছেলে। পেশায় তিনি ছিলেন ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক।
জানা যায়, নয়নকে লংগদু উপজেলা সদর থেকে দুই উপজাতি যুবক ভাড়ায় নিয়ে হত্যার পর খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ওই এলাকায় লাশ ফেলে নয়নের ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ১ জুন নয়নের বড় ভাই মো. দ্বীন ইসলাম লিটন বাদী হয়ে দীঘিনালা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে লংগদুর দ্বীপ আলো চাকমা ও ইমন চাকমার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়।