২৪ জন শ্রমিকের এক মাসের শ্রম

SHARE

 ২৪আওয়ার ডেস্ক :  কেক মূলত পাশ্চাত্যের খাবার। কিন্তু বর্তমানে কেক আমাদের নানান উৎসবের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। জন্মদিন, বিয়েসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানে ক্রিমের কারুকার্যময় নানান রকমের কেক আমরা দেখি। উচ্চমূল্যের বিদেশি কেক যেমন পাওয়া যায়, তেমনি পাওয়া যায় পাড়ার মুদি দোকানে অখ্যাত বেকারির কেক। তবে নামি-দামি সব কেক পিছনে ফেলে ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত ‘লি  নভেলি কেক’ বেকারি ভিন্ন ধরনের এমন এক কেক তৈরি করছে যা বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে।

১৯৯৩ সালে সুসানটি সুনারদজি ও রিকি রিয়াডি সম্পূর্ণ পারিবারিকভাবেই এই বেকারি চালু করেন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে কেক তৈরি করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৪ সালে এসে বেকারিটি লি নভেলি নামে এক ধরনের ওয়েডিং কেক তৈরি করতে শুরু করে। বিয়ের জন্য ব্যবহৃত এই কেক জাকার্তা শহরে অল্প দিনেই ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

লি নভেলি ওয়েডিং কেকের জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ এর বাহারি নকশা। তবে দিনে দিনে এই নকশা আরো সুন্দর হয়েছে। বর্তমানে বিয়ের  জন্য যে সব লি নভেলি কেক ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে রূপকথার গির্জা বা প্যাগোডার নকশা বেশি করা হচ্ছে। এর ফলে কেক তৈরিতে আগের থেকে সময় যেমন বেশি লাগছে তেমনি বেড়েছে কেকের উচ্চতা ও মূল্য। বর্তমানে এই ব্র্যান্ডের প্রতিটি কেক তৈরিতে ২৪ জন শ্রমিকের এক মাসের মতো সময় লাগছে এবং উচ্চতা দাঁড়িয়েছে ৭ মিটার অর্থাৎ প্রায় ২৩ ফুটের কাছাকাছি। আর উপাদানের উপর ভিত্তি করে প্রতিটি কেকের দাম পড়ছে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৫ লাখ ডলারের মধ্যে।

বেকারিটির বর্তমান মালিক টিফনি রিয়াডি ডেইলি মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা এক সাথে বেশ কিছু কেকের অর্ডার নিই। তবে প্রতিটি কেক তৈরিতে আমরা তিন সপ্তাহের বেশি সময় নিয়ে থাকি। কারণ প্রতিটি কেকেই আমরা অর্ডারকারীর ব্যক্তিগত চাহিদাকে প্রাধান্য দেই যেন ভোক্তা মনে করেন কেকটি শুধু তার জন্যই তৈরি করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের লি নভেলি কেকের উচ্চতা এতটাই বেড়েছে যা সাধারণ কোনো ভ্যান গাড়িতে করে আর বহন করা সম্ভব নয়। ফলে আমরা প্রতিটি কেক অর্ডারকারীর কাছে পৌঁছাতে ট্রাক ব্যবহার করি।’

শুধু বাহারি নকশা আর উচ্চতা নয় লি নভেলি কেকের আরো একটি আজব বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ক্রেতার পছন্দ অনুযায়ী এই কেকে ব্যাটারির সাহায্যে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থাও থাকে। আলো জ্বালানোর অন্যতম কারণ হচ্ছে কেকটি যেন আরও সুন্দর হয়। যেন মনে হয় এটি আসলেই রূপকথার কোনো গীর্জা বা প্যাগোডা।

তবে লি নভেলি কেকের সবচেয়ে হতাশ করা বিষয় হচ্ছে কেকটি অত্যন্ত দামি এবং দেখতে দৃষ্টিনন্দন হলেও এর সামান্য অংশ খাওয়া যায়। আর কেকের বাকি অংশ শুধুমাত্র সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য। এ বিষয়ে টিফনি বলেন, ‘আমরা চাইলে কেকের সম্পূর্ণ অংশ খাওয়ার উপযোগী করে তৈরি করতে পারি তবে সেক্ষেত্রে কেকের মূল্য পড়বে অনেক বেশি।’