কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির সেলে বন্দি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুলের স্বজনদের দেখা করতে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির কাছে করা প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার পর মঙ্গলবার স্বজনদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে।তবে দুপুর পর্যন্ত তাদের কোনো স্বজন কারাগারে এসে তাদের সঙ্গে দেখা করেননি।
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, এদের স্বজনদের কারাগারে দেখা করতে মঙ্গলবার সকালে বার্তা পাঠানো হয়েছে। তবে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কেউ কারাগারে দেখা করতে আসেননি।
এদিকে তাদের ফাঁসি কার্যকরের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন আছে বলেন তিনি। কারাগারে জল্লাদ ও ফাঁসির মঞ্চ সবকিছুই প্রস্তুত আছে। তবে কবে কখন তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হচ্ছে তা জানা যায়নি।
এর আগে আদালতে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার পর কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দি মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগী রাষ্ট্রপতির কাছে করা প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচের কপি সোমবার কারাগারে পৌঁছায়।
কারাগারের সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, ২৭ মার্চ কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তারা রাষ্ট্রপতির কাছে তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন। পরে তা স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যায়। সম্প্রতি ওই আবেদন নাকচ করেন রাষ্ট্রপতি। সোমবার তাদের আবেদন নাকচের কপি সোমবার কারাগারে পৌঁছায়। এখন বিধিমোতাবেক তাদের ফাঁসি কার্যকরের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, ওই আবেদন রিজেক্ট হওয়ার পর প্রাণভিক্ষার আবেদন করার দিন থেকে ২২দিনের কম নয় এবং ২৮দিনের বেশি নয় এমন সময়ের মধ্যে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করার বিধান রয়েছে।
এর আগে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, ফাঁসির রায়ের রিভিউ আবেদন খারিজের রায়ের অনুলিপি ২১ মার্চ রাত পৌণে ১২টার দিকে কারাগারে পৌঁছায়। পরদিন বুধবার সকাল ১০টার পর তা তাদের পড়ে শুনানো হয়। এছাড়া ওইদিন সিলেট কারাগার থেকে আসা মৃত্যু পরোয়ানাটিও রাতে তাদের পড়ে শুনানো হয়েছে।সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি হান্নান ও বিপুল কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং অপর আসামি দেলোয়ার হোসেন রিপন সিলেট জেলা কারাগারে ফাঁসির সেলে বন্দি রয়েছেন।
রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা না চাইলে বা চাওয়ার পর তা প্রত্যাখ্যাত হলে কারাবিধি অনুসারে প্রথম দু’জনের কাশিমপুরে এবং অন্যজনের সিলেটে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হতে পারে বলে জানিয়েছে কারা সূত্র।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালাল (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।