সাভারে ৩ তরুণ হত্যায় মা ও ‘প্রেমিক’ গ্রেপ্তার

SHARE

saver
সাভারের হেমায়েতপুরে দুই ভাইসহ তিন তরুণ হত্যার ঘটনায় মা নাসরিন বেগম ও তার কথিত প্রেমিক কেরু মানিক ওরফে কেরু ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৪।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) ভোরে আমিনবাজার থেকে কেরু ডাকাত ও সহোদরের মা নাসরিন বেগমকে নিলফামারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। নাসরিন বেগম ইতোমধ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তরুণদের হত্যার কথা স্বীকার করেছে। র‌্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বাংলামেইলকে এ তথ্য জানান।

র‌্যাব-৪ এর উপাধিনায়ক মেজর মো. খুরশীদ আলম জানান, আজ ভোরে অভিযান চালিয়ে কেরু মানিককে আটক করা হয়েছে। এরপর তরুণদের মা নাসরিন বেগমকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তারা দুজনেই ট্রিপল মার্ডারে সরাসরি সম্পৃক্ত। দুপুর ১২টায় এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার এস আই জাকারিয়া হোসেনের বরাত দিয়ে বাংলামেইলের সাভার করেসপন্ডেন্ট আবদুল কাইয়ূম জানান, গত ১৪ মে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে সাভার হেমায়েতপুরের প্রান্ত ডেইরি ফার্ম নামে একটি গরুর খামারে শ্রমিকদের থাকার ঘর থেকে দুই ভাই ও ফুফাতো ভাইসহ তিন তরুণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।

প্রাথমিকভাবে জানা যায়, তারা তিনজন প্রতিদিনের মত রাতে খাবার খেয়ে ওই কক্ষে ঘুমাতে যায়। সকালে অনেক ডাকাডাকি করে কোনো শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে তাদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে। এছাড়া তাদের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিল না।

তবে ঘটনার পর থেকে মায়ের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলতে থাকে। হঠাৎ করে নাসরিন বেগম তার বাসা থেকে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে তাকে আটক করতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। পরে নিলফামারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা যায়, নাসরিন বেগমের সঙ্গে সাভারের আমিনবাজারের কেরু মানিক ওরফে কেরু ডাকাত নামে একজনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ছেলেরা বিষয়টি জেনে গেলে কেরু ও নাসরিন বেগম তাদের হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মতো রাতে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দেয়। এতে বিষক্রিয়ায় দুই সহোদর ও তার ফুফাতো ভাই মারা যায়। অন্যদিকে নাসরিনের স্বামী জিয়াউর রহমান কোনো কারণে রাতে খাবার খাননি। এতে বেঁচে যান তিনি।

উল্লেখ্য যে, নিহত দুই ভাইয়ের নাম নাছির ও জীবন। তারা হেমায়েতপুরে একটি গ্যারেজে কাজ করতেন। দুই ভাই কিশোরগঞ্জ জেলার গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে। তাদের বাবা জিয়াউর রহমান হেমায়েতপুরে প্রান্ত ডেইরি ফার্মের কর্মচারী ও পাশের একটি কক্ষে দুই ছেলে ও বোনের ছেলেসহ বসবাস করতেন। অপর নিহত ফুফাতো ভাই শাহাদাতের বাড়ির একই গ্রামে বলে জানা গেছে। সে হোময়েতপুরে একটি খাবার হোটেলে কাজ করতো।