জাতীয় পার্টিরকো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দু’একজনের সুবিধার জন্য জাতীয় পার্টির মন্ত্রিসভায় থাকার দরকার নেই। তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগেই মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দলীয়ভাবে চেষ্টা চলছে।
বুধবার জাতীয় পার্টির কাকরাইলস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে এক প্রস্তুতি সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী ১৬ই এপ্রিল জাপার কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।
জিএম কাদের বলেন, সময়-সুযোগ ও পরিস্থিতি বুঝে আমরা মন্ত্রিসভা থেকে সরে আসবো। এ জন্য পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা কারো লেজুড়ভিত্তি হয়ে থাকতে চাই না।
তিনি বলেন, আমার মন্ত্রী হওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। আমাদের ক্ষমতায় যেতে হবে। তাতে প্রতিটি নেতাকর্মী মূল্যায়িত হবে। আমি ভিত্তশালী নই। আমার কোনো বাহিনী নেই। পদ-পদবী নিয়ে পার্টির মধ্যে ব্যবসা করতে আসেনি। জনগণের জন্য কিছু করতে এসেছি। পার্টিতে এখন গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।
জাপার এই নেতা বলেন, আমরা সত্যিকারের বিরোধী দল হতে চাই। সরকারে মন্ত্রিত্ব রেখে বিরোধীদল হওয়া যায় না। আমাদের অনেক দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হবে। আর তা পাড়ি দেয়া সহজ হবে, এটা ভাবার দরকার নেই। আমাদের নিজেদের মাঝে যে বিভেদ আছে তা ভুলে যেতে হবে। আমরা সব বিভেদ ভুলে যেতে চাই। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। এ বিভেদ জাতীয় পার্টিকে অনেক পিছনে নিয়ে গেছে।
দলের কো-চেয়ারম্যান বলেন, দল থেকে যারা বহিষ্কার হয়েছে, পর্যায়ক্রমে তাদের সবাইকে দলে ফিরিয়ে নেয়া হবে। অতীতের জেলা সম্মেলনগুলোতে অনেককেই বাদ দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। তাদেরও ফিরিয়ে আনা হবে। নতুন কোনো জেলা কাউন্সিলে কাউকে বাদ দিয়ে কমিটি করা হবে না।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে জিএম কাদের বলেন, আশা করি আমি কোনো সিদ্ধান্ত নিলে আপনারা মেনে নিবেন। কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে পর্যালোচনা করার সময় মতবিরোধ থাকতেই পারে। কিন্তু সিদ্ধান্ত কার্যকর করার সময় কোনো মতবিরোধ থাকবে না। পার্টিতে পদ-পদবী নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে। প্রতিযোগিতা থাকেবে। কিন্তু মতবিরোধ থাকবে না। সব মতবিরোধের ঊর্ধ্বে এসে সবাইকে নিয়ে এক সঙ্গে চলতে হবে। অল্পকিছু পাওয়ার জন্য আমরা যুদ্ধ করছি না। সবকিছু পাওয়ার জন্যই যুদ্ধ করছি। এখন মাঠে আছি। মাঠে থাকবে।
পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপির সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাইদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রিন্টু আনোয়ার প্রমুখ।