বিডিআর বিদ্রোহের রাতে তারেক রহমান বাংলাদেশে কেন ৪৫ বার ফোন করেছিল? ঘটনার দুই ঘণ্টা আগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া কেন ক্যান্টমেন্টের বাসা ছেড়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গেলেন? এমন নানা প্রশ্ন তুলে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের জন্য খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে তিনি সভাপতির বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে সবে শপথ নিয়েছিলাম আমরা। ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র কয়েক দিন পর এমন হত্যাকাণ্ড সরকারকে হতভম্ব করেছিল। ওই ঘটনার জন্য তিনি (খালেদা) আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন আসছেন। ক্ষমতায় এসে কোনো সরকার এমন ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে, তা দুনিয়ার কেউ বিশ্বাস করতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, যে ৫৭ জন অফিসার ওই দিন মারা গিয়েছিলেন, এর মধ্যে ৩৩ জনই আওয়ামী লীগ পরিবারের। পরিকল্পিতভাবে তাদেরকে বিডিআর-এ দেয়া হয়েছিল এবং হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য একদিন বের করা হবে এবং খালেদা জিয়ারও বিচার করা হবে।
জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রপতি বলা আদালত অবমাননার সামিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই তাকে হত্যা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয়া হয়। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে একের পর এক কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন। তিনিই মানবতাবিরোধীদের বিচার বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতার খুনিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করে জাতির ললাটে কলঙ্ক লেপেছিলেন। একই ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়াও মানবতাবিরোধীদের বিচার বানচাল করতে নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন।
১/১১ বিএনপির কারণেই সৃষ্টি হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চারদলীয় জোট সরকারের দুঃশাসনের কারণে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছিল। আর এ কারণেই সেনাসমর্থিত সরকার ক্ষমতায় আসে। এটি ছিল জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।
বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মডেল দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এখন বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ করে এগিয়ে যাচ্ছে। নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু নিমার্ণ হচ্ছে। বিশ্ব দেখুক আমরাও পারি। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রাই কারো কারো গাত্রদাহের কারণ হয়েছে। তারা নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা কোনো ষড়যন্ত্রই থামিয়ে দিতে পারবে না। তিনি জঙ্গিবাদ মোকাবেলার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহববু-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনসহ কেন্দ্রীয়নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।