জীবনযুদ্ধে পরাজিত মাগুরার বীর মুক্তিযোদ্ধারা

SHARE

71দেশকে স্বাধীন করার যুদ্ধে নেমেছিলেন মাগুরার অকুতোভয় বীর সৈনিকরা। পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে বীরোচিত যুদ্ধে এসব মুক্তিযোদ্ধা জয়লাভ করলেও অনেকেই আজ জীবনযুদ্ধে পরাজিত। জীবন জীবিকার তাগিদে তাদের অনেকেই রিকশা-ভ্যান চালাতে বাধ্য হচ্ছেন।

মাগুরা সদর উপজেলার করচাডাঙ্গা গ্রামের আনসার ট্রেনিংপ্রাপ্ত আহম্মদ হোসেন মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই তৎকালীন ইপিআর দলের সঙ্গে গিয়ে যশোর শহর দখল যুদ্ধে অংশ নেন। পরে ভারতের বিহারের চাকুলিয়া ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তিযোদ্ধাদের ১টি গ্রুপের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েন যুদ্ধে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের গুজাডাঙ্গা, হঠাৎগঞ্জ, কাকডাঙ্গা, হাকিমপুর এলাকায় পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন তিনি। তখন এক সময় যশোরের কেশবপুর থানা ভবন দখল করে নেয় আহম্মদ হোসেনের দল। আহম্মদ হোসেন আজ বড় অসহায়। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। রিকশা-ভ্যান চালাচ্ছেন মাগুরায়।

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বারইপাড়া গ্রামের তাহাজ্জত আলী মুক্তিযুদ্ধে শ্রীপুর আঞ্চলিক বাহিনীভুক্ত হয়ে লড়েছেন নাকোল, আলফাপুর, গোয়ালপাড়া, মাঝাইল যুদ্ধে। যুদ্ধ শেষে কাজ কর্ম না পেয়ে কৃষি শ্রমিকের কাজ করেছেন। পরে রিকশা-ভ্যান ধরেছেন। প্রায় ৩৫ বছর যাবত রিকশা ভ্যানের চাকার সঙ্গে তাহাজ্জত আলীর দৈনন্দিন জীবনের চাকা ঘুরছে। অভাব অনটনে কাটাচ্ছেন দিন।

একই উপজেলার সাহসী যোদ্ধা ছিলেন মদনপুর গ্রামের মনোয়ার হোসেন, চন্দ্রপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলাম, দাইরপোল গ্রামের ইদ্রিস আলী, হাট শ্রীকোল গ্রামের বাটুল শেখ। এরা সবাই হাজীপুর, বিনোদপুর, গাংনালিয়া, আলফাপুর, নাকোল, বারইদিয়ার যুদ্ধসহ শ্রীপুর ও শৈলকুপা থানা ভবন দখলের মরণপণ যুদ্ধে কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। তবে স্বাধীনতার পর সেসব কৃতিত্ব বিসর্জনে গেছে। সাংসারিক অভাব অনটন মোকাবেলার যুদ্ধে এরা পরাজিত। প্রায় ৩০/৩৫ বছর যাবত রিকশা ভ্যান চালাতে বাধ্য হচ্ছেন।