আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার জন্য নয়, ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য দুই দেশের অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর সমাধান হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।বুধবার দুপুরে দশম জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় (বাজেট) অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে এমন মন্তব্য করেন আমির হোসেন আমু।
আমু বলেন, “সম্প্রতি ভারতের একটি পত্রিকায় বেগম খালেদা জিয়া তার সাক্ষাৎকারে বলেছেন আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার জন্য ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সমস্যাগুলোর সমাধান হচ্ছে না। তার এমন বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আওয়ামী লীগের কারণে ভারতে সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সমস্যাগুলোর সমাধান হয়নি এটা মিথ্যা কথা।”
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশে তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান, এরশাদ এবং আপনি (খালেদা জিয়া) ২১ বছর ক্ষমতায় ছিলেন, ছিটমহল, ফারাক্কা, তিস্তা, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও সমুদ্র সীমানা নির্ধারণ করতে ভারতের সঙ্গে কী করেছেন। উনারা যখন ক্ষমতায় আসেন তখন এসব সমাধানের জন্য আলোচনা তো দূরের কথা, চিন্তা করেছেন বলেও মনে হয় না।”
শিল্পমন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রিরা গান্ধীর সঙ্গে ৪৪ হাজার কিউসেক পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করে ফারাক্কা চুক্তি ও অমীমাংসিত ছিটমহল নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর এসব বিষয়ে আর কোনো সমাধান হয়নি। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর ফারাক্কা চুক্তির মাধ্যমে ৩০ বছরের জন্য পানি প্রাপ্যতা নিশ্চিত করেন। এবারো সিটমহল নিয়ে ভারতে সঙ্গে বাংলাদেশের একটি সমাঝোতা হয়েছে। আমরা আমাদের সংসদে অমীমাংসিত সিটমহলের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছি। কিন্তু ভারত এখনো পর্যন্ত তাদের সংসদে অনুমোদন দিতে পারেনি।”
তিনি বলেন, “আমাদের গত মেয়াদে যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশে সফরে এসেছিলেন তখনই তিস্তা ও সিটহল নিয়ে মীমাংসা হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু পশ্চিম বঙ্গে মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ওই সফরে বাংলাদেশে না আসায় এবং এসব চুক্তির ব্যাপারে একমত না হওয়ায় চুক্তিগুলো সম্পাদন সম্ভব হয়নি। এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। এখানে আওয়ামী লীগের কোনো ব্যর্থতা নেই।”
আমু বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ সমুদ্র সীমানা নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে বড় একটি অংশ আমরা জয় করেছি। ভারতের সঙ্গে আমাদের যেসব সমুদ্রসীমা বিরোধ রয়েছে সেগুলোর পাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে একটি মামলা করা হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির ভারতের কাছ থেকেও আমরা সমুদ্রসীমা জয় করবো।”
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বেড়ে যায় খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে শিল্পমন্ত্রী বলেন, “খালেদা জিয়া ১৯৯১ ক্ষমতায় আসার পরপর এদেশের সব মন্দিরগুলোর ওপর হামলা করা হয়। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এলে এদেশের সংখ্যা লঘুদের ওপর নির্মম নির্যাতন নেমে আসে। এখন খালেদা জিয়া বলছেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নেমে আসে। এটা একটা ডাহা মিথ্যা কথা।”
আমু বলেন, “খালেদা জিয়া জন বিচ্ছিন্ন হয়ে আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ হয়ে এসব কথা বলা শুরু করেছে। ভারতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি জন্য উলফাকে সহায়তা করার লক্ষ্যে তার ছেলে ও নিজামীর নেতৃত্বে ১০ ট্রাক অস্ত্র আনা হয়েছিলো। খালেদা জিয়ার মুখোশ আজ উন্মোচিত হয়েছে।”