হাম্বি-তাম্বি নয়, সাংবাদিকদের সঙ্গে যুক্তি দিয়ে কথা বলুন

SHARE

হুমকি ধামকি বা হাম্বি-তাম্বি নয় সাংবাদিকদের সঙ্গে যুক্তি দিয়ে কথা বলতে রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।image_88573_0

তিনি বলেন, “সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদের সম্পর্ক দাম্ভিকতার নয়। এরা একে অপরের পরিপূরক। কেবল সাংবাদিকদের মাধ্যমে একজন রাজনীতিবিদ জনগণের সঙ্গে তার সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে পারে। তাই তাদের সঙ্গে যুক্তির মাধ্যমে কথা বলতে হবে। তারাই আমাদেরকে জনগণের কাছে তুলে ধরবে।”

সোমবার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইস্টটিউট অব বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে নৌকা সমর্থক গোষ্ঠী আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, নারায়গঞ্জের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান সাংবাদিকদের কুকুরের সঙ্গে তুলনা করে বলেছিলেন, “ছোট্ট বেলায় দেখেছি ধনীরা বাড়িতে কুকুর পালতেন, আরো ধনীরা বিদেশি কুকুর পালতেন, এখন নব্য ধনীরা মিডিয়ার মাধ্যমে সাংবাদিক পালে। এরা ভেঙচি কাটে লাথি মারলে কামড় দিতে আসে। এদের মালিক পক্ষ যদি আমার পক্ষে লেখতে বলে এরা তাই করে।”

শামীম ওসমানের বক্তব্যের সমালোচনা করে সুরঞ্জিত রাজনীতিবিদদের আরো সংযত ও সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়। সাংবাদিকের মাধ্যমেই একজন রাজনীতিবিদ জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারে। রাজনীতিবিদদের বুঝতে হবে। দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সাংবাদিকরা আমাদের ভুলত্রুটি নিয়ে সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক। এ ভুলত্রুটির বিচার করবে জনগণ।”

অবিলম্বে সাংবাদিক রাজনীতিবিদদের ‘অশ্লীল’ বির্তক বন্ধ করতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও অশালীন বিতর্ক রাজনীতিকে কুলষিত করবে। রাজনীতিবিদদের আরো সুশীল হতে হবে। হুমকি-ধামকি বা অন্য কোনো কার্যকলাপ নয়।”

সুইস ব্যাংকের টাকা নিয়ে বিএনপির ভয় কেন?
সুইস ব্যংকের টাকা ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটির দাবি জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তবের জবাবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, “সুইস ব্যাংকের টাকা নিয়ে বিএনপি’র এতো ভয় কেন। ইউএনডিপি তো বলেনি এই টাকার মালিক কারা। একবারতো তাদের টাকা আনা হয়েছিল। এখন তাদের ভয় কিসের। তাদের মনোভাব দেখে মনে হয় ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খায় না।”

দেশের জনগণ জানতে চাই এই টাকার মালিক কারা তাই এই টাকা যারই হোক একটা স্বচ্ছ ও স্পষ্ট উপায় বের করে সরকারকেই তা ফিরিয়ে আনতে হবে বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এই মন্ত্রী।

সুরঞ্জিত বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে সুইস ব্যাংকে ৮০০ মিলিয়ন বাংলাদেশি টাকা পাচার করা হয়েছে। একথা ইউএনডিপি প্রকাশ করেছে। তারা তো বলেনি এই টাকা রাজনীতিবিদদের এ টাকা অসাধু ব্যবসায়ীদেরও তো হতে পারে। যারা টাকা পাচার করে তাদের একাটাই পরিচয় অর্থপাচারকারী। এরা দেশ প্রেমিক হতে পারে না।”

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইস ব্যাংকের টাকা ফেরত আনার ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা ভেবে ছিলাম বিরোধী দল বিএনপি এটিকে স্বাগত জানাবে। কারণ টাকা যারই হোক দেশের টাকা দেশে আনা হচ্ছে। এতে মির্জা ফখরুলের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই। টাকা ফেরত আনতে কমিটি করা হবে কি, হবে না সেটার দায়িত্ব সরকারের।”

আন্তর্জাতিক কমিটি নিয়ে তাদের যদি কোনো পরামর্শ থাকে সেটা সরকারকে জানাতে পারে মন্তব্য করে সুরঞ্জিত বলেন, “সেই কমিটি কিভাবে হবে কারা থাকবে, কবে হবে কেন জাতীয় কমিটিতে হবে না তা তাদের (বিএনপিকে) পরিষ্কার করতে হবে।”

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ সেলিম এমপির সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।