স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য পুলিশের অস্বীকার

SHARE

nipirokগত ১লা বৈশাখে বর্ষবরণ উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় যৌন নিপীড়নের ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে গ্রেফতার নিয়ে জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছে তা অস্বীকার করেছে পুলিশ। এদিকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পুলিশের পরস্পর বিরোধী বক্তব্যে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে।

সোমবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, বর্ষবরণে নিপীড়নের ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

কিন্তু এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।

মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, ওই ঘটনার পর বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলে নিপীড়নিকারী কয়েকজনের ছবি প্রচার করে। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ মিডিয়ায় তাদের দোষী সাব্যস্ত অনেক ভুক্তভোগীতের বক্তব্যও উঠে আসে।

তবে তিনি বলেন, দুজন পুরুষ ও একজন নারী এসে আমাদের জানিয়েছে তারা ঘুরতে গিয়েছিলেন, নিপীড়নে জড়িত নন। আমরাও এর সত্যতা পেয়েছি।

ডিএমপি’র এর যুগ্ম কমিশনার আরো বলেন, নিপীড়নে জড়িত একজনের সম্পর্কে তথ্য পেয়ে পুলিশ বরিশালে তার বাড়িতেও গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে এক বৃদ্ধকে পাওয়া যায়; গত পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি ঢাকায় আসেননি।

সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, চিহ্নিত ব্যক্তিদের (ধরার বিষয়ে) আমাদের আইজি সাহেব (পুরস্কারের) ঘোষণাও দিয়েছেন। কয়েকজনকে আমরা ধরেছি। তাদের আইনের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। দুই-একজন বাকি আছে। তাদেরও ধরব।

উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের উৎসবের সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে ভিড়ের মধ্যে একদল যুবক নারীদের ওপর চড়াও হয়। তাতে বাধা দিতে গিয়ে আহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি লিটন নন্দীসহ কয়েকজন।

সে সময় চার নিপীড়ককে ধরে দুই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে দেওয়া হলেও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে পুলিশের পক্ষ থেকেও বিষয়টি স্বীকার করা হয়।

ওই ঘটনায় পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। এক মাসেও কাউকে গ্রেফতার করতে না পেরে ছবি ও ভিডিও দেখে চিহ্নিত আটজনের পরিচয় শনাক্ত করার জন্য গত ১৭ মে ১ লাখ টাকা করে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়।

ওই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে- তা উচ্চ আদালতও রুল জারি করেছিল। এ বিষয়ে রুল পাওয়ার পর গত ১৯ মে পুলিশের মহাপরিদর্শক আদালতে একটি প্রতিবেদন দেন। তবে ওই প্রতিবেদনে কি আছে, তা গণমাধ্যমকে জানানো হয়নি।