সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এমডিজির তৃতীয় লক্ষ্য জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নের যে লক্ষ্যটি রয়েছে, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ খুব সামান্যই অর্জন করতে পেরেছে। শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা অর্জিত হয়েছে বলে জাতিসংঘ জানাচ্ছে।
গত ১৫ বছরে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে শতকরা ৫০ ভাগ নারীর অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যমাত্রা ছিল, কিন্তু অর্জিত হয়েছে শতকরা ২০ ভাগ। রাজনীতিতেও নারীর অংশগ্রহণ আশানুরূপ বাড়েনি। নীতিনির্ধারণেও নারীর অবদান সামান্যই।
একজন নারী উদ্যোক্তা তাসলিমা মিজি, যিনি একসময় সাংবাদিকতা করতেন, তার মতে, “নারীর ক্ষমতায়ন যদি একটা মানুষ হয়, তাহলে সেটি মাত্র তার শিশুকাল পার করছে। মাত্র তার জন্ম হয়েছে, সেটাকে যত্ন করতে হবে সবাই মিলে। তারপরে হয়তো পরিপূর্ণ মানুষ অর্থাৎ ক্ষমতায়নটা হতে পারে।”
বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে তাসলিমা মিজি বলছিলেন, নারীকে এখনো অত্যাচার-নির্যাতন, অবমূল্যায়নসহ নানামুখী সমস্যা পার করতে হয়।
মিজি বলছিলেন, “ক্ষমতায়ন আমার কাছে মনে হয় একটা বায়বীয় ধারণা। একটা মেয়ে হয়তো নিজের মানসিক শক্তির কারণে এগিয়েছে, কেউ হয়তো তার পরিবারের সাপোর্টের কারণে কিছুটা এগিয়েছে। কিন্তু সামগ্রিক একটা সিস্টেমেটিক ডেভেলপমেন্টের কথা যে বলা হয়, যেটা সমগ্র সোসাইটিকে টেনে নিয়ে যেতে পারবে, সে রকম কোনো পরিবর্তন চোখে পড়ছে না।”
“বাইরে কাজ করতে গেলে এখনো অনেক নারীকে তার পরিবারেই অনেক কথা শুনতে হয়। পরিবারের কাজগুলো সেরে তারপর বাইরে বের হতে হয়। আর বাইরের কাজেও বাজে অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়”, বলেন তাসলিমা মিজি।
একটি কম্পিউটার বিক্রির প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন তাসলিমা মিজি। তিনি বলছিলেন, ব্যবসাক্ষেত্রে নারী্- এটা অনেক পুরুষ সহজ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে না। তারপর বিশ্বাসের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টরাও নানাভাবে অপদস্ত করে।
তাসলিমা মিজি বলেন, “মেয়েরা সব ধরনের কাজ করবে, পরিবার-সমাজে সবকিছুতে সমান ভূমিকা রাখবে, এই মানসিকতা এখনো মানুষের মনে তৈরি হয়নি। তবে আমাদের হাল ছাড়লে হবে না। এগিয়ে যেতে হবে।”- বিবিসি।