ঢাকা মহানগর বিএনপির করুণ চিত্র

SHARE

bnp dhakaকোথাও নেই ঢাকা মহানগর বিএনপি। পূর্ণাঙ্গ কমিটির তৎপরতা ফাইলবন্দি। কার্যালয় তালাবদ্ধ। গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো একরকম বন্ধ হয়ে গেছে। আগে সাংগঠনিক তৎপরতা কম থাকলে রমজানে ইফতারকেন্দ্রীক কর্মসূচিতে সরব থাকতো বিএনপির এই গুরুত্বপূর্ণ শাখা। তবে এবারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ এবার ইফতারও হচ্ছে না।

গ্রেপ্তারের ভয়ে কমিটির আহ্বায়ক-সদস্য সচিবের প্রকাশ্যে আসতে না পারা, বিলম্বে যাওয়ায় খালেদা জিয়ার কাছ থেকে সময় না পাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।

দশম সংসদ নির্বাচন ঠেকাও আন্দোলনে চরমভাবে ব্যর্থ হওয়ায় ঢাকা মহানগর বিএনপিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেন খালেদা জিয়া। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের জুলাই মাসে  খোকা-সালাম কমিটিকে বাদ দিয়ে আব্বাস-সোহেলের নেতৃত্বে ৫২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।পূর্ণাঙ্গ কমিটির জন্য দুইমাসের সময় বেঁধে দিলেও তারা এক বছরে কোনো কূল করতে পারেনি।

আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর কাজে গতি আনতে ১৫টি সাব কমিটি করা হলেও গতি আসেনি। তবে থেমে থাকেনি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের আশ্বাস। আত্মগোপনে যাওয়ার আগে একাধিককার মহানগরের এই শীর্ষ দুই নেতার দাবি ছিল কমিটি প্রায় চূড়ান্ত। যে কোনো সময় ঘোষণা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি।

তবে আন্দোলনের আগে ১০০ ওয়ার্ডের মধ্যে অর্ধেকের কমিটি অনেকটা চূড়ান্ত ছিল বলে দাবি করেছেন আহ্বায়ক কমিটির একজন যুগ্ম আহ্বায়ক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে  তিনি বলেন, হঠাৎ করে আন্দোলনের ঘোষণায় কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। আর কিছুদিন পরে কর্মসূচির ঘোষণা আসলে নেতাকর্মীরা সক্রিয় হতে পারত। পুলিশি হয়রানি থেকে রক্ষা পেত।

শুধু মহানগর আহ্বায়ক কমিটি নয়, রাজধানীর থানাগুলোতেও রমজান জুড়ে ইফতারের কর্মসূচি পালন করতে পারেনি বিএনপি। ৪৯ থানার মধ্যে এ পর্যন্ত শুধুমাত্র মোহাম্মদপুর থানায় গত শুক্রবার একটি ইফতারের আয়োজন করা হয়। সাবেক কমিশনার এনায়েতুল হাফিজের সভাপতিত্বে শ্যামলীর বাদশাহ ফয়সাল ইনস্টিটিউটে ইফতারে প্রধান অতিথি ছিলেন তাবিথ আউয়াল।

ঢাকা মহানগর বিএনপির একজন যুগ্ম আহ্বায়ক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এবার আমাদের ইফতার হচ্ছে না। কারণ নেতারা বের হতে পারছেন না। এছাড়া ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) কাছে ইফতারের জন্য সময় নিতে বিলম্বে যাওয়ায় তিনি সময় দিতে পারেননি। তবে তিনি থানা পর্যায়ে ইফতারের আয়োজন করার নির্দেশনা দিয়েছেন’।

নেতাদের দেখা না মিললেও ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মহানগর বিএনপির দপ্তরের বেশ তৎপরতা দেখা যায়। কিন্তু নির্বাচন শেষ হওয়ার পর দপ্তরও লাপাত্তা! আগে বিভিন্ন উপলক্ষে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠানো হলেও এখন তাও আসছে না।

এদিকে দলের গুরুত্বপূর্ণ এই শাখার কার্যক্রমে রীতিমত ভাটা পড়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশার ‍সৃষ্টি হয়েছে।

চকবাজার থানা বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এভাবে পালিয়ে পালিয়ে আর কতদিন থাকবো জানি না। এখন দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। ডু অর ডাইয়ের পথে না গেলে সামনে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ।

অনেকভাবে চেষ্টা করেও মির্জা আব্বাস ও হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

তবে ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু সাঈদ খান খোকন বলেন, পুলিশ এখনো আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না। আর চেয়ারপারসন ওমরা করতে যাবেন সে কারণে ইফতারেরও সিডিউল পাওয়া যায়নি। তবে তার কাছে সময় নিতে বিলম্বে যাওয়ায় একটু সমস্যা হয়েছে।