দিন-রাতের টেস্টে গোলাপি বল নিয়ে বিতর্ক

SHARE

ballক্রিকেট ইতিহাসে হতে যাচ্ছে এক যুগান্তকারী পটবদল৷ প্রথমবার দিন-রাতের টেস্ট ক্রিকেট৷ যেখানে খেলার অধিকাংশ হবে ফ্লাডলাইটে৷ লাল বলের বদলে থাকবে গোলাপি বল৷ চা-বিরতি থাকলেও থাকবে না লাঞ্চ৷ তার বদলে থাকবে ডিনার ব্রেক৷

ব্র্যাডম্যানের শহর অ্যাডিলেড ওভালে অনুষ্ঠেয় এই টেস্টে খেলবে অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ড, যা নিয়ে জল্পনায় মুখর ক্রিকেট দুনিয়া৷ আইসিসি চিফ এক্সিকিউটিভ ডেভিড রিচার্ডসন বলছেন, ‘এই দুই দেশকে অভিনন্দন৷ এতে বোঝা যায়, ক্রিকেট যেমন ক্রিকেটারদের, ঠিক তেমনই দর্শকদেরও৷ ক্রিকেটের বিশ্বায়নের জন্য এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি ছিল৷’

কিন্ত্ত আইসিসি চিফ এক্সিকিউটিভ যা-ই বলুন, দিন-রাতের টেস্টে যে গোলাপি বল ব্যবহূত হবে, তা নিয়ে বিতর্ক এখনই তুঙ্গে৷ অ্যাসেজ খেলতে এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডে থাকা অজি পেসার মিচেল স্টার্ক দাবি করেছেন, ফিল্ডিং করার সময় ওই গোলাপি বল দেখতে তার অসুবিধা হয়েছে৷ নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে শেফিল্ড শিল্ডে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওই মাঠে খেলেছেন স্টার্ক৷ বলেছেন, ‘ওটা মোটেই লাল বলের মতো দেখতে নয়৷ লাল বলের মতো সুইংও করে না, অত শক্তও নয়৷ তাড়াতাড়ি বলটা নরম হতে শুরু করে৷ খুব বেশি রিভার্স সুইং করানো কঠিন৷ কাজেই এই বল কেমন হবে, তা নিয়ে আমি খুব নিশ্চিত নই৷’

সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘এ ছাড়া বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করার সময় এই বল দেখতে অসুবিধে হয়৷ আমি তো বল দেখতেই পাচ্ছিলাম না৷ জানি না, এই সমস্যা কী ভাবে সমাধান হবে৷ কোকাবুরা সংস্থা অবশ্যই এই নিয়ে কাজ করে চলেছে৷’ প্রাক্তন ইংল্যান্ড ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেন আবার মনে করেন, রাতের টেস্ট ক্রিকেটের জন্য আলাদা স্ট্যাটিটিক্সের রেকর্ড হওয়া দরকার৷

তার কথাকে ধরেই স্টার্ক বলছেন, ‘এটা নিয়ে আইসিসি ভেবে দেখতেই পারে৷ তবে আপাতত একটাই টেস্ট হচ্ছে৷ যেখানে অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ড খেলবে৷ দেখা যাক, ব্যাপারটা কেমন দাঁড়ায়৷’

এতেই শেষ নয়৷ ক্রিস রজার্সের মতো কালার ব্লাইন্ড ক্রিকেটার আবার গোলাপি বল দেখতেই পান না৷ যা নিয়ে স্টার্ক বলছেন, ‘ক্রিস রজার্সের মতো কেউ গোলাপি বলে খেলতেই পারবে না এবং সমস্যাটা শুধু ওর একার নয়৷ তাই এটা ভাবা দরকার, গোলাপি বলের জন্য আলাদা স্ট্যাটিটিক্স করা যায় কি না৷ যেমন লাল ও সাদা বলের বেলা আছে৷’

অস্ট্রেলিয়া টিমের স্টিভ স্মিথ ও ব্র্যাড হ্যাডিন ব্যাপারটা নিয়ে উত্সারহী, বোলার জোস হ্যাজেলউড অতটা নয়৷ শেন ওয়াটসনের মতে, খেলাটা না হলে এই নিয়ে আগে থেকে জল্পনা করে লাভ নেই৷ ‘ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এবং চ্যানেল নাইন ব্যাপারটা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা ভাবনা করছে৷ খেলাটা হলে বোঝা যাবে এটাই টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ কি না৷ ক্রিকেটাররা খেলার পরেই বুঝতে পারবে, ব্যাপারটা কোন দিকে যাবে৷’

মাইকেল ক্লার্কের টিমের আর এক পেসার মিচেল জনসন বলছেন, ‘এই নিয়ে এখন কথা বলতে চাই না৷ যা বলার অ্যাসেজের পরে বলব৷ তবে আমি টেস্ট ক্রিকেটের ট্র্যাডিশনকে ভালোবাসি৷ ব্যাগি গ্রিন আর উলের জাম্পার পরতে গর্বিত বোধ করি৷ ওটা বদলে যেতেই পারে, কিন্তু ঐতিহ্য আমার কাছে খুব জরুরি৷ সেটা অবশ্যই রক্ষা করা উচিত৷’

ও দিকে, আইসিসি চিফ এক্সিকিউটিভ বলছেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, বহু পরীক্ষার পরেই গোলাপি বল ব্যবহৃত হচ্ছে৷ বেশ কিছু প্রথম শ্রেণির ম্যাচও ওই বলে খেলা হয়েছে৷ মনে হয় না, বল নিয়ে কোনো সমস্যা তৈরি হবে৷’