আসছে ৩০ জুনের বাড়ছে দৈর্ঘ্য। ২০১৫ সালের ৩০ জুনের সঙ্গে যোগ হচ্ছে অতিরিক্ত এক সেকেন্ড (লিপ সেকেন্ড), ফলে অনান্য দিনের থেকে লম্বায় বাড়ছে এই দিনটি।
ইন্টারন্যাশনল আর্থ রোটেশন অ্যান্ড রেফেরেন্স সিস্টেম সার্ভিস (IERS) ৩০ জুনের সঙ্গে অতিরিক্ত ১ সেকেন্ড যোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পৃথিবীর ঘূর্ণনের ক্ষুদ্র পরিবর্তন লক্ষ্য করে প্যারিসে অবস্থিত এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটি সময়ের পরিবর্তন করে।
”পৃথিবীড় ঘূর্ণন খুব ধীরে খানিক কমেছে, লিপ সেকেন্ডের যোগ সেই পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই করা।” জানিয়েছেন নাসার গোবার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের ড্যানিয়েল ম্যাকমিলন।
১৯৭২ সালে প্রথম কোনো নির্দিষ্ট দিনের সঙ্গে লিপ সেকেন্ড যোগ করার প্রচলন শুরু হয়। তারপর থেকে মোট ২৫ বার লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছে। প্রত্যেক বারেই ৩০ জুনের সঙ্গেই বর্ধিত এক সেকেন্ড যোগ করা হয়। ১৯৭২ সালের আগে ভিন্ন প্রক্রিয়ার সময়ের সমন্বয় করা হতো।
সাধারণ অবস্থায় এক দিনে মোট ৮৬ হাজার ৪০০ সেকেন্ড থাকে। সমন্বিত এই ইউনিভার্সাল টাইমের (UTC) উপরই পৃথিবীর তামাম জনতার জীবন নির্ভরশীল। নির্ভুল অ্যাটোমিক ক্লকের মাধ্যমে এই সময় নির্ধারিত হয়। সেসিয়াম ক্লক এতটাই নির্ভুল যে প্রতি ১৪ লক্ষ বছর অন্তর এর প্রতি সেকেন্ডে পরিবর্তন হয়।
অন্যদিকে, একটি সৌরদিন নির্ভর করে নিজের অক্ষের চারদিকে ঘুরতে পৃথিবীর কত সময় লাগে তার উপর। গড়ে এই সময় ৮৬ হাজার ৪০০.০২ সেকেন্ড। পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্যের মধ্যে মাধ্যাকর্ষণের টানাপোড়েনের ফলে পৃথিবীর ঘূর্ণন খুব ধীরে ধীরে কমে। বিজ্ঞানীদের মতে ১৮২০ সালের পর থেকে একটি সৌরদিন আর ৮৬ হাজার ৪০০ সেকেন্ড দিয়ে গঠিত নয়।
এই ২ মিলি সেকেন্ড বা এ সেকেন্ডের ২০০০ ভাগের এক ভাগ চোখের পলক ফেলতে যা সময় লাগে তার থেকে অনেক অনেক কম। কিন্তু, প্রত্যেক বছর, প্রতি দিন এই ২ মিলি সেকেন্ডের পার্থক্য আসলে সব মিলিয়ে প্রায় এক সেকেন্ডের পার্থক্য সৃষ্টি করে।
প্রত্যেক দিনের দৈর্ঘ্য প্রকৃতপক্ষে আরও কিছু ফোর্সের উপর নির্ভরশীল। এই ফোর্সগুলি ভীষণই অপ্রত্যাশিত এবং অনিশ্চিত। মরসুমি ও দৈনিক আবহাওয়ার পার্থক্য, জমে থাকা সঞ্চিত বরগ, ভূগর্ভস্থ জন, মহাসমুদ্র ও বায়ুমণ্ডলের বৈচিত্র, ঢেউ, পৃথিবীর অন্তঃস্থলে গতি সহ বিবিধ কারণ এই পরিবর্তনের জন্য দায়ী। এল নিনো অনেক সময় পৃথিবীর ঘুর্ণন কমিয়ে ফেলার ক্ষমতা রাখে, প্রায় ১ মিলি সেকেন্ড পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে দিনের দৈর্ঘ্য।
Very Long Baseline Interferometry (VLBI) টেকনিকের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নিজের অক্ষের চারদিকে ঘুরতে পৃথিবীর কত সময় লাগে তা নির্ণয় করেন।