জাতিসংঘের একটি খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মোতায়েনকৃত শান্তিরক্ষীরা ‘পণ্যসামগ্রীর বিনিময়ে যৌনতা কিনছে’। অথচ শান্তিরক্ষীদের মোতায়েন করা হয়েছে ওই সব দেশের মানুষদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করার জন্য।
বিবিসি অনলাইনের এক খবরে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের অফিস অব ইন্টারন্যাল ওভারসাইট সার্ভিসেস (ওআইওএস) এক প্রতিবেদনে বলেছে, তাদের অনুসন্ধানে ধরা পড়েছে হাইতি ও লাইবেরিয়ার শত শত নারীকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের কারণে যৌনসঙ্গ বিক্রি করার জন্য প্রভাবিত করা হচ্ছে।
যৌনসঙ্গের বিনিময়ে নারীদের দেওয়া হচ্ছে নগদ অর্থ, সোনাদানা, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য সামগ্রী।
ওআইওএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৪৮০টি যৌনঘটিত শোষণ ও স্বার্থসিদ্ধির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় শিশুদের সম্পৃক্ততা এক-তৃতীয়াংশ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, হাইতি ও লাইবেরিয়ায় এ-সংক্রান্ত জরিপে অংশ নেওয়া শত শত নারী জানিয়েছে, ক্ষুধা, দারিদ্র্য থেকে মুক্তি ও জীবন ধারণের পথ উন্নয়নের কথা বলে যৌনতা বিক্রিতে উদ্বুদ্ধ করা হয় তাদের। ওআইওএসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
খসড়া প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রয়টার্স আরো জানিয়েছে, জরিপকৃত দুই দেশের তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যাচ্ছে, কোনো কিছুর বিনিময়ে যৌনতা বিক্রি’ করার ঘটনা স্বাভাবিক। কিন্তু শান্তিরক্ষা মিশনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে না।
বার্তা সংস্থা এপির বরাত দিয়ে বিবিসি বলেছে, হাইতির ২৩১ ব্যক্তি গত বছর স্বীকার করে, ‘শান্তিরক্ষীদের সঙ্গে তাদের বিনিময়কৃত’ যৌন সম্পর্ক রয়েছে।
ওআইওএসের প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে এপি আরো জানিয়েছে, যেসব ক্ষেত্রে অর্থের লেনদেন না করেই যৌনসঙ্গ পাওয়ার চেষ্টা করে শান্তিরক্ষীরা, সেসব ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নারীদের অসতীত্ব প্রকাশ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
এতে আরো বলা হয়েছে, শুধু ২০১৪ সালেই এ ধরনের ৫১টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেখানে এর আগের বছর ছিল ৬৬টি।
তবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা অভিযান ও ফিল্ড সাপোর্ট বিষয়ক বিভাগ জানিয়েছে, গত ১০ বছরে ক্রমেই যৌনতাবিষয়ক অভিযোগ কমে এসেছে।
বিশ্বের কয়েকটি দেশে বর্তমানে জাতিসংঘের ১ লাখ ২৫ হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন রয়েছে।