ইসরায়েলি সৈন্যদের হাতে ফিলিস্তিনি এক বন্দিকে নির্যাতনের ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) সাবেক মিলিটারি অ্যাডভোকেট জেনারেল মেজর জেনারেল ইয়িফাত টোমার-ইরুশালমিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ভিডিও ফাঁসের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেন ইয়িফাত টোমার-ইরুশালমি। তবে রবিবার ঘটনাটি আরো নাটকীয় মোড় নেয়। তাকে নিখোঁজ বলে দাবি করে তেল আবিবের উত্তরের এক সমুদ্রসৈকতে ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে পুলিশ ওই নারী কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে।
এই ভিডিও ফাঁসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ও সামরিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
খবরে বলা হয়, ২০২৪ সালের আগস্টে একটি ইসরায়েলি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, দক্ষিণ ইসরায়েলের সদে টাইমান সামরিক ঘাঁটিতে কিছু রিজার্ভ সৈন্য এক ফিলিস্তিনি বন্দিকে আলাদা করে নিয়ে যায়। এরপর তারা দাঙ্গা দমনের ঢাল দিয়ে চারপাশ ঘিরে ফেলে। এরপর ওই বন্দিকে নির্মমভাবে মারধর করা হয় এবং ধারালো বস্তু দিয়ে তার পায়ুপথে আঘাত করা হয়।
ঘটনার পর পাঁচজন রিজার্ভ সৈন্যের বিরুদ্ধে গুরুতর নির্যাতন ও শারীরিক ক্ষতির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। তবে তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
পরে রবিবার চারজন সৈন্য কালো মুখোশ পরে জেরুজালেমের সুপ্রিম কোর্টের বাইরে সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির হন। তাদের আইনজীবীরা মামলা বাতিলের দাবি জানান।
সোমবার প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, ভিডিওতে নির্যাতনের শিকার ওই ফিলিস্তিনি বন্দিকে ২০২৪ সালের অক্টোবরে গাজায় ফেরত পাঠানো হয়েছিল। তিনি ছিলেন সেই বন্দিদের একজন, যাদের ইসরায়েল হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের বিনিময়ে মুক্তি দিয়েছিল।
এরপর গত সপ্তাহে ভিডিও ফাঁসের ঘটনার ওপর আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়। এ সময় জেনারেল টোমার-ইরুশালমিকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। পরে শুক্রবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ঘোষণা দেন, তিনি আর তার পদে ফিরতে পারবেন না।
এরপরই টোমার-ইরুশালমি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
তার পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেন, আমার অধীনস্থ ইউনিট থেকে কোনো উপকরণ গণমাধ্যমে ফাঁস হয়ে থাকলে, তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমি নিচ্ছি।
এই ঘটনার ফলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক প্রভাব ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিতর্ক আরো জোরালো হয়েছে।
            
	


