প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) টেক্সটাইল কারখানায় লাগা ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, বিজিবি এবং সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর ২৬টি ইউনিটের রাতভর যৌথ প্রচেষ্টার পর সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।
তবে আগুন পুরোপুরি নেভাতে আরো সময় লাগবে বলেও জানানো হয়।
ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট অগ্নি নির্বাপণের কাজ অব্যাহত রেখেছে। ভবনের বিভিন্ন স্থানে এখনো ধোঁয়া ও ছিটেফোঁটা আগুন দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট আগুন পুরোপুরি নেভানোর কাজ করছে।
আগুনে আটতলা বিশিষ্ট ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ কারখানার ভবনটি প্রায় সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানান, চিকিৎসাসেবায় ব্যবহৃত পোশাক ও সরঞ্জাম তৈরির এই কারখানায় প্রচুর দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দীর্ঘ সময় লেগেছে।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কে অবস্থিত কারখানাটিতে আগুন লাগে। প্রথমে অষ্টম তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়, পরে তা দ্রুত সপ্তম ও ষষ্ঠ তলায় ছড়িয়ে পড়ে।
চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্টেশন থেকে মোট ২৬টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়।
তবে আগুনের ভয়াবহতার কারণে তাদের কার্যক্রমে ধীরগতি হয়।
শুরুতেই সিইপিজেডে অবস্থানরত সেনাবাহিনীর একটি টিম ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দেয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নৌবাহিনীর পাঁচটি এবং পরবর্তী সময় বিমানবাহিনীর একটি ইউনিটও অংশ নেয়।
সন্ধ্যার পর আগুন ক্রমে পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। তীব্র উত্তাপে আশপাশের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকার পরিবেশ অসহনীয় হয়ে ওঠে।
অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা ভবনটি ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেন।
একপর্যায়ে আগুনের তীব্রতায় ভবনটি ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত অষ্টম তলার কিছু অংশ ধসে পড়ে। তবে আগুন আশপাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়েনি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘ সময়ের প্রচেষ্টায় অবশেষে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন ভবনের ভেতরে নির্বাপণের কাজ চলছে। আগুনের উৎস কোথায় এবং কীভাবে সূত্রপাত হয়েছিল তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’ আগুনে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলেও জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।