“আমরা কখনোই আমাদের পতাকা সমর্পণ করব না।” ডানপন্থিদের বিশাল বিক্ষোভ ও পাল্টা প্রতিবাদের পর এক কঠোর বার্তায় এমন মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের পতাকা দেশের বৈচিত্র্য, সহনশীলতা ও শ্রদ্ধার প্রতীক— একে বিভাজন বা সহিংসতার প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে না।
রবিবার ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, “মানুষ শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতে পারে—এটাই আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। কিন্তু রাস্তায় কাউকে তার বর্ণ বা পরিচয়ের জন্য আতঙ্কিত করা, কিংবা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
বিক্ষোভে উত্তাল লন্ডন, সংঘর্ষে আহত পুলিশ
প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য আসে এমন এক সময়, যখন শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে ডানপন্থি নেতা টমি রবিনসনের ডাকে “Unite the Kingdom” শীর্ষক এক মিছিলে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ অংশ নেন। পাল্টা বিক্ষোভে “Stand Up to Racism” ব্যানারে জড়ো হয় প্রায় ৫ হাজার প্রতিবাদকারী।
মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিন সংঘর্ষে ২৬ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চারজন গুরুতর। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৪ জনকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভকারীরা ইউনিয়ন জ্যাক, সেন্ট জর্জ, স্কটিশ সাল্টায়ার ও ওয়েলসের পতাকা নিয়ে মিছিলে অংশ নেন। তবে বিক্ষোভের মধ্যে দিয়ে জাতিগত বিদ্বেষ ও অসহিষ্ণুতার প্রকাশ ঘটেছে বলেও সমালোচনা ওঠে।
“বিভাজন কেবল রাজনৈতিক নয়, সামাজিকও” — সতর্কতা মন্ত্রীর
ব্যবসা মন্ত্রী পিটার কাইল বলেন, এই ঘটনা রাজনৈতিক নেতাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। তার মতে, অভিবাসনসহ সমাজের বড় সমস্যাগুলো এখন অবিলম্বে সমাধান করা প্রয়োজন। কাইল বলেন, “সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, সমাজে যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে তা আর কেবল বাম-ডান রাজনীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এই বিভক্তি এখন সামাজিক পরিসরেও প্রবেশ করেছে।”
তিনি আরও বলেন, যারা সহিংসতায় জড়িয়েছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
ইলন মাস্কের ‘উসকানিমূলক’ মন্তব্য
অন্যদিকে এই বিক্ষোভে ভিডিও লিঙ্কে সংযুক্ত হয়ে মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক বলেন, “প্রতিরোধ করো, নইলে মরে যাও।” তিনি যুক্তরাজ্যে “অসংযত অভিবাসন” নিয়ে সতর্ক করে সরকার পরিবর্তনের ডাক দেন।
কিন্তু কাইল মাস্কের মন্তব্যকে “সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত” আখ্যা দিয়ে বলেন, “এ ধরনের বক্তব্য এই পরিস্থিতিকে আরও উসকে দেয়। একে আমরা দায়িত্বশীল নেতৃত্ব বলতে পারি না।”
“পতাকাকে বিভেদের প্রতীক বানাতে দেওয়া হবে না”
সমাপনী মন্তব্যে স্টারমার বলেন, “যুক্তরাজ্য সহনশীলতা, বৈচিত্র্য ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের পতাকা এই বৈচিত্র্যের প্রতীক। এটিকে কেউ বিভাজনের হাতিয়ার বানাতে চাইলে, আমরা তা কঠোরভাবে প্রতিহত করব।”
আপনি চাইলে এই প্রতিবেদন সংক্ষিপ্ত, ব্লগ বা সোশ্যাল মিডিয়া ফরম্যাটেও চেয়ে নিতে পারেন।