গাজাবাসীর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা ইস্যু স্থগিত

SHARE

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য সব ভ্রমণ ভিসা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। এর কারণ হিসেবে তারা বলেছে, সম্প্রতি কিছু অস্থায়ী চিকিৎসা-মানবিক ভিসার ইস্যু প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি ‘সম্পূর্ণ ও বিস্তৃতভাবে পর্যালোচনা’র জন্য এই বিরতি দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে এই সিদ্ধান্তের কারণে কিছু ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংস্থা সমালোচনা জানিয়েছে। প্যালেস্টাইন চিলড্রেনস রিলিফ ফান্ড তাদের বিবৃতিতে বলেছে, এই সিদ্ধান্ত ‘গাজা থেকে আহত ও গুরুতর অসুস্থ শিশুদের জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আনার ক্ষমতার ওপর ধ্বংসাত্মক ও অপরিবর্তনীয় প্রভাব ফেলবে’।

পররাষ্ট্র দপ্তরের নীতি পরিবর্তন এমন এক সময় এলো, যখন উগ্রপন্থী অ্যাক্টিভিস্ট লরা লুমার একাধিক পোস্টে ভিসা প্রগ্রামের সমালোচনা করেন এবং ট্রাম্প প্রশাসনকে ‘এই অমানবিক কার্যক্রম বন্ধ করতে’ আহ্বান জানান। তিনি শনিবার পরবর্তীতে এক পোস্টে এই নীতি পরিবর্তনের জন্য কৃতিত্ব গ্রহণ করেন এবং মার্কো রুবিওকে ধন্যবাদ জানান ভিসা স্থগিত করার জন্য।

প্যালেস্টাইন চিলড্রেনস রিলিফ ফান্ড জানিয়েছে, তারা ২০২৪ সালে গাজা থেকে ১৬৯ শিশুকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের চিকিৎসা হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যে গাজার বেশির ভাগ চিকিৎসা অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এখন সেখানে খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। মানবিক সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে, মার্চ মাস থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজায় যথেষ্ট খাবার পৌঁছাতে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে বাধা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি সরকার বলছে, সহায়তাসংক্রান্ত বিধিগুলো হামাসের দখলে খাবার না যাওয়ার জন্য নেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘ সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা, মানবিক সংস্থা ও গাজা থেকে প্রতিবেদন করা সাংবাদিকরা খেয়াল করেছেন, গাজায় দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
জুলাইয়ের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস ও রয়টার্সের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিবিসি একটি প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, গাজায় সাংবাদিকরা অনাহারের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

বিবৃতিতে আরো লেখা হয়েছে, ‘বেশ কয়েক মাস ধরে, এই স্বাধীন সাংবাদিকরা গাজার মাটিতে বিশ্বের চোখ ও কান হিসেবে কাজ করছেন। তারা যে পরিস্থিতি প্রতিবেদন করেছেন এখন তারা তার সমান কঠিন অবস্থার মুখোমুখি।’

জুলাই মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় ‘বাস্তবিকভাবে দুর্ভিক্ষ’ দেখা দিয়েছে, তবে তার প্রশাসন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি স্থিরভাবে সমর্থন রেখেছে।