কানাডার সবচেয়ে বড় এয়ারলাইন বৃহস্পতিবার থেকে ফ্লাইট স্থগিত করতে শুরু করবে। কারণ ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের প্রতিনিধিত্বকারী ইউনিয়ন ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
এয়ার কানাডা জানিয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে ধাপে ধাপে ফ্লাইট স্থগিত করা হবে এবং যাত্রীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যে নিশ্চিত ফ্লাইট ছাড়া তারা যেন বিমানবন্দরে না আসে।
এয়ার কানাডার ১০ হাজার ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের প্রতিনিধিত্ব করা কানাডিয়ান ইউনিয়ন অব পাবলিক এমপ্লয়িজ (সিইউপিই) স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে এই ধর্মঘটের ডাক দেয়।
কারণ চুক্তি আলোচনায় অচলাবস্থা দেখা দেওয়ায় তারা এ পদক্ষেপ নেয়।
ইউনিয়ন জানিয়েছে, তারা আন্তরিকভাবে আলোচনা করেছে, কিন্তু এয়ার কানাডা মজুরিসংক্রান্ত প্রস্তাব ও অবৈতনিক কাজের মতো মূল বিষয়গুলো সমাধান করতে ‘অস্বীকার করেছে’।
এয়ারলাইনটি এর জবাবে ৭২ ঘণ্টার কর্মবিরতির নোটিশ দেয় এবং মঙ্গলবার রাতে জানায়, তারা সিইউপিইর কাছ থেকে অস্বাভাবিক পরিমাণে বেতন ও সুবিধা বৃদ্ধি দাবি করা একটি পাল্টা প্রস্তাব পেয়েছে এবং তারা বাধ্যতামূলক তৃতীয় পক্ষের সালিসিতে যাওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। ধর্মঘট স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১টা থেকে শুরু হবে।
৬৪টি দেশে ২৫৯টি বিমানের বহর নিয়ে পরিচালিত এই এয়ারলাইন আরো জানিয়েছে, অনাকাঙ্ক্ষিত এই বন্ধ ‘প্রতিষ্ঠান ও কর্মীদের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি’ এবং গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণের ব্যস্ত সময়ে দৈনিক প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার যাত্রীর ভ্রমণ বিঘ্নিত হতে পারে, যার মধ্যে ২৫ হাজার কানাডীয়ও রয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রথম এয়ার কানাডা ও এয়ার কানাডা রুজ ফ্লাইট বাতিল হবে এবং শুক্রবারও অতিরিক্ত ফ্লাইট স্থগিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার থেকে ‘সম্পূর্ণ ফ্লাইট বন্ধ’ শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে এয়ার কানাডা এক্সপ্রেস ফ্লাইট, যা দৈনিক যাত্রীদের প্রায় ২০ শতাংশ বহন করে, তাতে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।
বাতিল হওয়া ফ্লাইটের যাত্রীদের জানানো হবে এবং পূর্ণ অর্থ ফেরত দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে সংস্থা। এ ছাড়া অন্যান্য কানাডীয় ও বিদেশি বিমান সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে যাত্রীদের বিকল্প ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হবে। বিকল্প ব্যবস্থা সম্পর্কেও যাত্রীদের জানানো হবে, তবে তার জন্য অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে বা তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব নাও হতে পারে।
কানাডার সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বুধবার এক্সে জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং যাত্রীদের সরাসরি এয়ার কানাডার সঙ্গে যোগাযোগ করে ফ্লাইট তথ্য যাচাই করতে বলেছে। অন্যান্য বিমানবন্দর, যেমন ভ্যাংকুভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিকল্প পরিকল্পনায় কাজ করছে।
চুক্তি আলোচনায় এয়ার কানাডা জানিয়েছে, তারা ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের চার বছরে মোট ৩৮ শতাংশ সুবিধা বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে, যার মধ্যে প্রথম বছরে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সিইউপিই বলেছে, প্রস্তাবটি ‘মুদ্রাস্ফীতির নিচে, বাজারমূল্যের নিচে, ন্যূনতম মজুরির নিচে’ এবং তাতেও বোর্ডিং ও বিমানবন্দরে ফ্লাইটের আগে অপেক্ষাসহ কিছু কাজের ঘণ্টার জন্য ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের বেতন দেওয়া হবে না।