সোমবার (১৯ মে) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের তুলাতুলী ও মেরিন ড্রাইভসংলগ্ন এলাকায় কোস্টগার্ডের অভিযানের সময় এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৩০ হাজার ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল, ৪ রাউন্ড গুলিসহ তিন মাদক পাচারকারিকে।
আটকরা হলেন: উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দার মো. ইলিয়াস (৩০), নুর মোহাম্মদ (৬১) ও গুলিবিদ্ধ আব্দুল শক্কুর (৪০)। এতে গুলিবিদ্ধ শুক্কুরকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ কোস্টগার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, ‘সাগরপথে মিয়ানমার থেকে মাদকের একটি বড় চালান উপকূলীয় এলাকা দিয়ে প্রবেশ করছে-এমন সংবাদ পাওয়া যায়। এর ভিত্তিতে সোমবার ভোরে শাহপরীর দ্বীপ কোস্টগার্ডের একটি বিশেষ দল টেকনাফ সদর ইউনিয়নের তুলাতলী নৌঘাটসংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।
সাগরে ৫৮ দিনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা চলছে। এরমধ্যে একটি নৌকাকে দেখতে পান কোস্টগার্ড সদস্যরা। ওই ইঞ্জিনচালিত কাঠের নৌকাটিকে সন্দেহজনক মনে হলে থামার সংকেত দেয়া হয়। এ সময় পাচারকারীরা কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে নৌকার গতি বাড়িয়ে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কোস্টগার্ড সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে আব্দুল শক্কুর (৪০) নামে এক পাচারকারী গুলিবিদ্ধ হন।
কোস্টগার্ড সদস্যরা ঘণ্টাব্যাপী নৌকাটিকে ধাওয়া করে জব্দ করতে সক্ষম হয়। এ সময় চার মাদকপাচারকারী সাগরে লাফ দিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। গুলিবিদ্ধ ইয়াবা পাচারকারীকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে টেকনাফ এরপর কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বোটটিতে তল্লাশি করে একটি ৯ এম এম বিদেশি পিস্তল, ৪ রাউন্ড তাজাগুলি এবং ৩০ হাজার ইয়াবাসহ তিনজন মাদক পাচারকারীকে আটক করা হয়। জব্দ করা সব আলামতসহ আটক ইয়াবা পাচারকারীদের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রিয়াদ সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা পিঠে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আব্দুস শুক্কুর নামে এক যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ আরও বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ২৪ ঘণ্টা টহল জারি রেখেছে; যার মাধ্যমে কোস্ট গার্ডের আওতাধীন উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মাদক পাচার রোধ অনেকাংশে উন্নত হয়েছে। মাদক পাচার রোধকল্পে ভবিষ্যতেও কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।