ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠী ইসরায়েলে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রের দায় স্বীকার করেছে। তেল আবিবের কাছে বেন গুরিওন বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়েছিল। গোষ্ঠীর সামরিক মুখপাত্র এক টেলিভিশন বিবৃতিতে জানিয়েছেন এ কথা।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি এলাকায় সাইরেন বেজে উঠেছে।
তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। আইডিএফ জানিয়েছে, ইসরায়েলে প্রবেশের আগে ক্ষেপণাস্ত্রটি ধ্বংস করা হয়েছিল।
এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের বিমান বাহিনীর কথা উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশের আগে আইএএফ প্রতিহত করে। প্রোটোকল অনুসারে সাইরেন বাজানো হয়েছিল।
’
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলা চালানোর পর হুতি গোষ্ঠী ইসরায়েলসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইরান-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি ইসরায়েলকে তাদের শত্রু মনে করে। তারা সানা এবং ইয়েমেনের উত্তর-পশ্চিম নিয়ন্ত্রণ করে কিন্তু তারা দেশটির আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার নয়।
হুতি জানিয়েছে, তারা গাজায় ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে কাজ করছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে দিয়ে জানান, ইয়েমেনের হুতি আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলের পথে আক্রমণ চালিয়ে গেলে তাদের ‘ভয়াবহ’ পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।
পেন্টাগন জানিয়েছে, শনিবার থেকে তারা ইয়েমেনে ৩০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে এটিই সবচেয়ে বড় মার্কিন সামরিক অভিযান। ইয়েমেনে মার্কিন মারাত্মক হামলার পর রবিবার হুতি গোষ্ঠী প্রথমে লোহিত সাগরে ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যানে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল।
এদিকে ইয়েমেনে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলায় ১৬ হুতি সদস্য নিহত হয়েছেন।
বুধবার গভীর রাতে প্রাণহানির এই তথ্য জানিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতি। হুতি-সংশ্লিষ্ট সংবাদ সংস্থা সাবা অবশ্য হতাহতের পরিস্থিতি, সময় বা সঠিক অবস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট বিবরণ দেয়নি।
এর আগে, রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের বেশ কয়েকটি এলাকায় মার্কিন বিমান হামলায় সাতজন নারী এবং দুই শিশু আহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। হুতি-সংশ্লিষ্ট আল-মাসিরাহ টিভি অনুসারে, আল-জাওফ প্রদেশের সাদা, আল-হাজম জেলা এবং আল-বায়দা প্রদেশের আস সাওয়াদিয়াহ জেলায় বিমান হামলা চালানো হয়।
হুতিদের প্রতিবেদন অনুসারে, মার্কিন বিমান হামলায় ৫৩ জন নিহত এবং ১০৭ জন আহত হয়েছে। হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এটিই ছিল ইয়েমেনে প্রথম বিমান হামলা।
এদিকে গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি হামলা তীব্রতর হয়েছে। বিশেষ করে আজ ভোরবেলা। ইসরায়েলি বাহিনী কমপক্ষে ১১টি আবাসিক ভবন ধ্বংস করে দিয়েছে, বিশেষ করে খান ইউনিস, রাফাহ এবং বেইত লাহিয়া শহরে। মৃতের সংখ্যা তীব্রভাবে বেড়ে ৭১ জনে পৌঁছেছে। যাদের মধ্যে নবজাতক শিশু, শিশু, নারী এবং পুরুষও রয়েছেন। তারা হামলার সময় ঘুমিয়ে ছিলেন।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, দুই দিনে ৪৩০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। বিমান হামলা চালানোর পর ইসরায়েল গাজায় তাদের স্থল অভিযান বাড়িয়েছে।