মূল্যবোধ ধ্বংস করেছে পতিত মাফিয়া সরকার

SHARE

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের আবহমানকালের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধকে পতিত মাফিয়া সরকার ধ্বংস করেছে। একটি রাষ্ট্রের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ যদি ধ্বংস করে দেওয়া যায়- রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা চরমপন্থিদের এক উর্বর ভূমিতে পরিণত হবে। ফ্যাসিবাদী জনগোষ্ঠী তখন দেশে গণতন্ত্রের কবর রচনা করবে। অপরদিকে গণতান্ত্রিক বিশ্বে ইমেজ সংকটে পড়তে পারে বাংলাদেশ।

গতকাল রাজধানীর লেডিস ক্লাবে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির ভার্চুয়ালি বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে এই ইফতারের আয়োজন করে বিএনপি। অনুষ্ঠানের শুরুতে দলের পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির ইফতার মাহফিলে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে নায়েবে আমির ড. আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

তারেক রহমান বলেন, দেশের অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক চরিত্র অক্ষুণ্ন রাখতে চরমপন্থি ও উগ্রবাদী অপশক্তিকে প্রতিহত করার পাশাপাশি গণহত্যাকারী পলাতক মাফিয়া চক্রকে যে কোনো মূল্যে বিচারের সম্মুখীন করার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করাই হবে বিএনপিসহ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শক্তির রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার আর জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে মাফিয়াচক্রের দেশ থেকে পলায়নের পর সাত মাস পার হয়েছে। দীর্ঘ দেড় দশক মাফিয়া শাসন-শোষণে ধ্বংসপ্রাপ্ত বাংলাদেশ মেরামতের জন্য সাত মাস হয়তো খ্বু বেশি সময় নয়।
তবে আগামী দিনগুলোতে যদি নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম কিংবা কর্মপরিকল্পনার রূপরেখা সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেলে জনগণের সংশয়, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর হতো।

তারেক রহমান বলেন, শুধু একটি নির্বাচনের জন্য এই আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে মাফিয়া চক্রের পতন হয়নি, এ কথা যেমন সত্য- তেমনি আরেকটি চরম সত্য হলো- একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্মল নির্বাচন না হওয়ার জন্যই কিন্তু মাফিয়া চক্রের পতন হয়েছিল। সুতরাং একটি নির্বাচনকে শুধু একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ভাবার কোনো অবকাশ নেই। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণ যার যার ভোট দিয়ে নিজেদের পছন্দমতো প্রার্থীকে নির্বাচিত করার সুযোগ পায়। এর মাধ্যমে দেশে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার ও সংসদ তৈরি করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের সঙ্গে জনগণের মালিকানার সম্পর্ক আরও গভীরতর হয়। রাষ্ট্রে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের জন্য সোচ্চার। কিন্তু আন্তর্বর্তী সরকারের কিছু কিছু উপদেষ্টা ও দু-একটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে ইদানীং কিছুটা ভিন্ন সুরে কথা বলতে শোনা যায়। আমি মনে করি জনপ্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধা না রেখে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের নামে গৌণ ইস্যুকে মুখ্য করে অকারণে সময় নষ্ট করার চেষ্টা হলে সেটি জনমনে ভুল বার্তা পৌঁছাবে।