ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরাতেই কি ইসরায়েলে গেলেন রুবিও

SHARE

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শনিবার রাতে ইসরায়েলে পৌঁছেছেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা জোরদার করতেই রুবিও ইসরায়েল সফর করছেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিধ্বস্ত গাজা দখল এবং সেখানকার ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের জোরপূর্বক তাড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে আজ রবিবার জেরুজালেমে বৈঠকের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এই অঞ্চলে রুবিওর এটি প্রথম সফর।

টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, রুবিও তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। আজ রবিবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করবেন রুবিও। বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা করবেন।

রুবিও এর আগে মিউনিখে ছিলেন, যেখানে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধকেন্দ্রিক একটি নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নেন। সম্প্রতি ওয়াশিংটন সফরকালে নেতানিয়াহু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং গাজা নিয়ে ইসরায়েলের পরবর্তী পদক্ষেপে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পূর্ণ সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ট্রাম্প শনিবার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেন, এখন ইসরায়েলকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কী করবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের নেওয়া সিদ্ধান্তকে সমর্থন করবে।

রুবিওর ইসরায়েল সফর এমন সময়ে এলো যখন হামাস গাজা থেকে তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে, যা প্রায় এক মাসের যুদ্ধবিরতির আওতায় হওয়া ষষ্ঠ বন্দি বিনিময় চুক্তির অংশ।
এর বিনিময়ে শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

রুবিওর বৈঠকে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার আওতায় বাকি জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তির পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

ট্রাম্প গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং এর বাসিন্দাদের মিশর বা জর্ডানে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। তবে সব আরব দেশ এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করছে।
মিশর ও জর্ডান ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করতে না চাইলে তাদের জন্য পরিণতি হবে বলে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার রুবিও বলেন, এখন পর্যন্ত একমাত্র পরিকল্পনা ট্রাম্পের পরিকল্পনা—তারা এটি পছন্দ করুক বা না করুক। কিন্তু যদি তাদের কাছে আরও ভালো কোনো পরিকল্পনা থাকে, তাহলে এখনই তা উপস্থাপন করার সময়। রুবিও ইসরায়েল সফর শেষ করে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাবেন।

তবে নেতানিয়াহু গাজায় ট্রাম্পের বিতর্কিত পরিকল্পনা সম্পর্কে সরাসরি মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছেন। বরং, নেতানিয়াহু তার লক্ষ্যের ওপর বেশি মনোযোগী বলে মনে হচ্ছে। কারণ কোনোভাবে যদি যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে পড়ে তাহলে তিনি পুনরায় যুদ্ধ শুরু করতে চান। আর এ কারণে তার লক্ষ্য মার্কিন সমর্থন নিশ্চিত করা। নেতানিয়াহু বারবার বলেছেন, হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ হবে না। তবে এর জন্য অবশ্যই ট্রাম্পের আশীর্বাদ প্রয়োজন নেতানিয়াহুর।