ভারতের রাজধানীর নাম পাল্টানোয় উদ্যোগী হয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। নাম পাল্টালে নাকি ‘ইউনেস্কো হেরিটেজ সিটি’ তকমা পেতে সুবিধে হবে নয়া দিল্লির। কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্যোগের কথা কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক। ইউনেস্কোর খেতাবের আশায় রাতারাতি শহরের নাম পাল্টে ফেলা যায় কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও।
ভারতে শহরের নাম পাল্টানোর রীতি নতুন নয়। মাদ্রাজ হয়েছে চেন্নাই, বম্বে মুম্বাই, বাঙ্গালোর বেঙ্গালুরু। এবার সেই তালিকাতেই কি নতুন সংযোজন নয়া দিল্লি?
জানা গিয়েছে, নয়া দিল্লিকে ‘ইম্পিরিয়াল সিটি অব দিল্লি’ ও পুরনো দিল্লিকে ‘ইম্পিরিয়াল সিটি অব শাহজাহানাবাদ’ নাম দিতে চায় কেন্দ্র। ইউনেস্কোর দফতরে হেরিটেজ তকমা পেতে যে নথিপত্র পাঠানো হয়েছে তাতে দেশটির রাজধানীর দুই এলাকার জন্য ওই দু’টি নামের উল্লেখ করা হয়েছে। ইউনেস্কোর দলটি আসার আগেই তাই তড়িঘড়ি শহরের নাম পাল্টে দেওয়ার জন্য উদ্যোগী হয়েছে মোদি সরকার।
তবে নাম পাল্টালেই হেরিটেজ তকমা মিলবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। ইউনেস্কো-তকমা পাওয়ার জন্য বহু কড়া নিয়মকানুন রয়েছে। তাই শুধু নাম বদলে কোনো কাজই হবে না। দিল্লির নানা ঐতিহ্যমণ্ডিত এলাকারই ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ হয় না বলে মত বিশেষজ্ঞদের। যেমন বৃটিশ স্থপতি এডওয়ার্ড ল্যুটিয়েন্সের বানানো নয়া দিল্লির কেন্দ্রস্থলের একটা বড় অংশই এখন বহুতলের তলায় ঢাকা পড়ে গিয়েছে। আবার পুরনো দিল্লির বহু প্রাচীন সৌধই ভগ্নপ্রায়, সেগুলোর কোনো দেখাশোনাই হয় না। ফলে শুধু নাম পাল্টালেই যে রোম বা হাভানার মতো ‘ইউনেস্কো হেরিটেজ সিটি’র তকমা মিলবে, তা মনে করেন না অধিকাংশ বিশেষজ্ঞেরাই।
তাই মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। অনেকেরই মত, এ ক্ষেত্রে অনেকটা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কায়দায় কাজ করেছেন মোদি। অনেক সময়েই রাস্তা, স্টেশনের নাম এক কথায় বদলে দিয়েছেন মমতা। রাজধানীর নাম বদলের উদ্যোগও অনেকটা তেমনই।