ও হাঁটছে, ওকে হাঁটতে দাও: প্রধানমন্ত্রী

SHARE

hasina23প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্চে বসে আছেন। অনুষ্ঠান চলছে। শুরু থেকে আপনমনে মঞ্চের সামনে হেঁটে বেড়াচ্ছে এক শিশু। বয়স ১৫ থেকে ১৬ বছর। পরনে নীল ফতুয়া। দেখে বোঝা যায় সে অন্যরকম। অন্যদের চেয়ে আলাদা।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এএসএফ সদস্যরা পড়েছেন বিপাকে। একজন এ নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ও হাঁটছে, ওকে হাঁটতে দাও।’
আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অষ্টম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের অনুষ্ঠানে এই দৃশ্য দেখা যায়। অনুষ্ঠান আয়োজনে ছিল সমাজকল্যাণ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নীলবাতি (অটিজমের রং) জ্বেলে দিবসের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী ভাষণ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অটিস্টিক শিশুরা সমাজে আর বোঝা হয়ে থাকবে না। তাদের মূল্যবান সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তাদের জীবনকে অর্থবহ করতে চাই। তারাও সমাজের অংশ।’
প্রধানমন্ত্রী অটিস্টিক শিশু ও ব্যক্তিদের যাতে আর কেউ অবহেলা না করেন, এ আহ্বান জানান। তিনি সমাজের সুস্থ ব্যক্তিদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকে অটিস্টিক শিশুদের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানান।

এবারের বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে-‘অটিজম সচেতনতা থেকে সক্রিয়তা একীভূত সমাজ গঠনে শুভ বারতা’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুস্থ ক্রিকেটাররা বিশ্বকাপ জিতে আসতে না পারলেও স্পেশাল অলিম্পিকসে প্রতিবন্ধী খেলোয়াড়েরা জয়ী হয়েই ফিরবেন। এর আগেও বেশ কয়েকবার তারা বিশেষ পদক অর্জন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধীদের ক্রীড়া প্রসারের লক্ষ্যে সরকার একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়া কমপ্লেক্স স্থাপনের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

মেয়ে পুতুলকে ধন্যবাদ
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অটিজম বিশেষজ্ঞ তাঁর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘অটিজম সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষ খুব একটা সচেতন ছিল না। আমার কন্যা পুতুল মানুষের মধ্যে অটিজম সংক্রান্ত সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে। বলতে দ্বিধা নেই, তার কাছ থেকেই আমি অটিজম সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মেয়ে পুতুলকেও ধন্যবাদ। তার কাছ থেকে তার মা শিখেছে।’ পরে প্রধানমন্ত্রী অটিস্টিক শিশুদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং শিশুদের সঙ্গে ছবি তোলেন।

প্রধানমন্ত্রী অটিস্টিক শিশুদের ভেতরে যে সুপ্ত প্রতিভা লুকিয়ে আছে, তা বিকশিত করার বিষয়ে গুরুত্ব দেন। তিনি এ প্রসঙ্গে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য শেষে অটিস্টিক শিশু ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে অনেকে সহায়তা চান এবং কাগজপত্র তাঁর হাতে তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের সহায়তা করার আশ্বাস দেন।