বিরাজ করছে দেশে জরুরি অবস্থা : বিএনপি

SHARE

দেশে এক অস্বাভাবিক জরুরি অবস্থা বিরাজ করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। এটির সাথে বিশ্বের কোনো দেশেরই বিভৎস নির্মম শাসনের তুলনা করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেছে দলটি।

সোমবার দুপুরের দলের নয়া পল্টনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বি্‌এনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন। বুধবার খালেদা জিয়ার মুন্সীগঞ্জ  সফর সম্পর্কে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে রিজভী বলেন, “বর্তমান শাসনব্যবস্থা বিশ্বের সব নিপীড়ক নিষ্ঠুর শাসকদের দৃষ্টান্তকে অতিক্রম করেছে। দুঃশাসনের এক অন্ধকারতম সময় গ্রাস করেছে সমগ্র জনজীবনকে। দেশের প্রধানমন্ত্রী একগুঁয়ে বালিকাস্বভাবাপন্ন যখন যা খুশি বলছেন এবং করছেন। তিনি সংবিধান এবং রাষ্ট্রের অন্যান্য অঙ্গগুলোকে তাঁর খেলার সামগ্রী মনে করেন।”image_83483_0

বিরোধী দলগুলোর প্রতি এক জন্মান্ধ বিরোধিতা প্রধানমন্ত্রীর মাথায় চিরস্থায়ীভাবে চেপে বসেছে বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।

তিনি বলেন, “বর্বোরতম পরিকল্পনা ও সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে গত ৫ জানুয়ারির একতরফা ভোটারবিহীন নির্বাচন করার পরে তারা জনগণের সব অধিকার একে একে কেড়ে নিয়েছে। বিরোধী দলের রাজনৈতিক অধিকার গণতন্ত্রের প্রাণশক্তি। কিন্তু বর্তমান অবৈধ সরকার অত্যন্ত নিখুঁত পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে বিরোধী দল বিনাশে নির্মম কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং গণতন্ত্র ও সংবিধানে সভা সমাবেশ করার যে অধিকার সেটিকে তারা রাষ্ট্রের দমন যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে নির্মমভাবে প্রতিহত করছে।”

রিজভী বলেন, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে উন্মুক্ত কিংবা ঘরোয়া কোথাও সভা সমাবেশ করতে দিতে তারা আতংকগ্রস্ত ও উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছে। তারা একটি মনস্তাত্বিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এর কারণ দেশব্যাপী তাদের অপকর্ম এবং মানুষের রক্তঝরানো কর্মসূচি। তারা ঘোর দুর্দিনে দেশকে ঠেলে দিয়েছে। দেশজুড়ে গুম, খুন, অপহরণের সংস্কৃতিতে আওয়ামী লীগ দল হিসেবে একটা নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে। কদাচার, অনাচার, গুম, খুন, গুপ্তহত্যা এবং চরম দুর্নীতিতে দেশব্যাপী আর্তনাদ ও হাহাকারে তাদের মোটেও বোধোদয় হয় না।”

তিনি বলেন, “আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং দলীয় প্রভাবিত মিডিয়ার প্রচারের ধুম্রজালের আড়ালেও মানুষের কষ্টযন্ত্রণা তারা ঢাকা দিতে পারছে না। দুর্নীতি এদের সময় পাগলা ঘোড়ার মতো বেসামাল হয়ে পড়েছে। বিশ্ব মিডিয়ায় শিরোনাম হয়েছে।”

রিজভী অভিযোগ করেন, “শেখ হাসিনা শুধু নির্বাচন নয় গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়াটাকে ডাকাতি করে গদি দখল করে বসে আছেন। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের রক্তে নিজের হাত রঞ্জিত করে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের নিয়ে তিনি পার্লামেন্ট সাজিয়ে অবৈধ সরকার গঠন করেছেন।”

বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে সরকারের কুকর্মগুলি জনসমক্ষে উন্মোচিত হয়ে পড়ায় বিরোধী দলকে সভা সমাবেশ করতে সর্বত্র বাধা দেয়া হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে তাদের লালিত পালিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অতি সক্রিয় ভূমিকায় একটি ফ্যাসিবাদী সরকারেরই সুষ্পষ্ট চিত্র ফুটে উঠে।”

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ ইতিহাস থেকে কখনোই শিক্ষা নেয়নি, বরং ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে।”

রিজভী জানান, খালেদা জিয়া বুধবার মুন্সীগঞ্জ যাবেন এবং সেখানে লঞ্চঘাটে আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। ইতিমধ্যে সেই জনসভার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান রিজভী।