‘সাংবাদিক মিজানের পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন’

SHARE

mizan journalistপ্রথম আলোর বাউফল প্রতিনিধি এবিএম মিজানুর রহমানের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তার শারীরিক অবস্থার চিত্র সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরলেন মো. মনিরুল আহসান। তিনি বলন, “আসলে ওর পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাতে কিডনি ও অঙ্গের হাড়েও সমস্যা দেখা দিতে পারে। নির্যাতনে অচেতন হয়ে পড়ায় মস্তিষ্কে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সব বিষয়ে বিবেচনা করেই তার শরীরের এক্স-রে, সিটিস্ক্যান, কিডনি ও রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য বলা হয়েছে।”

মনিরুল আহসান পটুয়াখালী ২৫০-শয্যা হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ও মিজানের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের আহ্বায়ক।

আদালতের নির্দেশে গত বুধবার পটুয়াখালী সিভিল সার্জনের কার্যালয় চার সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে। রোববার মিজানের স্বাস্থ্য পরীক্ষার দিন নির্ধারিত ছিল। আগামীকাল স্বাস্থ্য পরীক্ষার এ প্রতিবেদন জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দাখিল করা জন্য মেডিকেল বোর্ডকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এর আগে সকাল ১০টায় দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জেলা কারাগার থেকে একটি পিকআপ ভ্যানে করে মিজানকে হাসপাতালে আনা হয়। পিকআপ ভ্যান থেকে নামার সময় মিজানের চোখে-মুখে ছিল তীব্র যন্ত্রণার ছাপ। পায়ের ব্যথায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাসপাতালের ভেতরে যান তিনি। স্বাস্থ্যপরীক্ষা শেষে দুপুর ১২টার দিকে তাকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

১৭ মার্চ রাতে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়ার ল্যাংড়া মুন্সিরপুল এলাকায় হাতাহাতির ঘটনায় কালাইয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হালিম খান বাদী হয়ে সাংবাদিক মিজানের বিরুদ্ধে বাউফল থানায় মামলা করেন। মামলায় মিজানের বিরুদ্ধে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ আনা হয়। ওই দিন রাতেই মিজানকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়।

পরদিন সকালে মিজানকে পটুয়াখালীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম-২ ফাইজুর রহমানের আদালতে হাজির করলে বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর ২২ মার্চ পটুয়াখালীর দ্বিতীয় বিচারিক হাকিম এএসএম তারিক শামসের আদালত মিজানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। তবে কারাবিধি অনুযায়ী তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে জেল সুপারকে নির্দেশ দেন।

জামিন আবেদন নাকচ করে নিম্ন আদালতের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে মিজানের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন আবেদনের ওপর ২৪ মার্চ শুনানি গ্রহণ করেন পটুয়াখালীর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক বিমল চন্দ্র সিকদার। আদালত মিজানের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিভিল সার্জনকে মেডিকেল বোর্ড গঠন এবং ৩১ মার্চের মধ্যে বোর্ডকে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এ ছাড়া ১ এপ্রিল ফের শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে। সূত্র: প্রথম আলো