নভেম্বরের মধ্যে স্কুলের পরীক্ষা শেষ করার পরিকল্পনা : শিক্ষামন্ত্রী

SHARE

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বিবেচনা করে চলতি শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা কার্যক্রম নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য আজ শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, যেহেতু ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির গোড়ায় আগামী জাতীয় নির্বাচনটি হওয়ার কথা, সে জন্য আমরা আমাদের সকল শ্রেণির যে বার্ষিক পরীক্ষা আছে এবং আমাদের ষষ্ঠ ও সপ্তমের যে মূল্যায়ন হবে এবং বার্ষিক পরীক্ষাও হবে। সেই কার্যক্রমগুলো ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আমার শেষ করতে চাই। যাতে, পরে নির্বাচনের প্রচারের সময়টায় গেলে তাদের পড়াশোনায় কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।
আগে ভাগে শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করতেই এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গ্রীষ্মের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান দীপু মনি।
তিনি বলেন, গ্রীষ্মের ছুটিটা আমরা বাতিল করে দিয়েছি। আমরা শীতের ছুটির সময়টা বাড়িয়ে দেব। ওখানে আমরা সমন্বয় করব।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনায় হওয়া শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে আনতে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হয় এমন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়া শোভনীয় নয়। রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণ করার এখতিয়ার রাজনৈতিক দলগুলোর আছে। আমার দাবি থাকবে, দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যেকোনো দলের কোনো কর্মসূচির কারণে যেন শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি না হয়, তা বিবেচনা করা দলগুলোর।
ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে যেকোনো রাজনীতির চেষ্টা করলে সেটা হবে অপরাজনীতি। আমরা আশা করব কোনো কর্মসূচির কারণে যেন আমাদের সন্তানদের পড়াশোনার ক্ষতি না হয়। সব রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুরোধ থাকবে এমন কোনো কর্মসূচি দেবেন না, যেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির কাছ থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সম্মিলিত ফলাফলের পরিসংখ্যান গ্রহণ করে ফল প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, আন্তঃবোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকারসহ সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা।
সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বরের ওপর করা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হওয়ায় এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, গত বছর পূর্ণ নম্বরের ওপর পরীক্ষা হয়নি। অল্প কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছিল। সময় অল্প ছিল, প্রশ্নপত্র কম ছিল। কিন্ত এবার তো পূর্ণ নম্বরের এবং সব বিষয়ের ওপর পরীক্ষা হয়েছে। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই গতবারের চেয়ে এবার পরীক্ষার ফলাফলে তার একটা প্রভাব পড়েছে। পাসের হার জিপিএ-৫ কিছুটা কমেছে।
এ বছর বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের গড় পাসের হার ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। গত বছর (২০২২ সাল) এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। অর্থাৎ গতবারের চেয়ে এবার পাসের হার প্রায় ৭ শতাংশ কম।
অন্যদিকে, কমেছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন শিক্ষার্থী। গত বছর (২০২২ সাল) জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। সেই হিসাবে এবার জিপিএ-৫ কম পেয়েছে ৮৬ হাজার ২৪ জন শিক্ষার্থী।
এদিকে জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা। জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে ৮৪ হাজার ৯৬৪ জন ছাত্র এবং ৯৮ হাজার ৬১৪ জন ছাত্রী।