আগামী সোমবার দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি।চল্লিশ বছর ধরে এই দিনটির আশায় বসে আছেন তার পরিত্যক্ত স্ত্রী যশোদাবেন।
ভোটের আগেই দু:খ করে একবার বলেছিলেন, ‘জানি কোনও দিন তিনি আমায় ফোন করবেন না। তবু জানি, একদিন উনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।’ যতদিন না স্বামী প্রধানমন্ত্রী হন, ততদিন অন্ন মুখে তোলেননি, পায়ে জুতা পরেননি। স্বামীর মঙ্গল কামনা করে গোটা দেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন মন্দিরে-মন্দিরে। তিনি শুক্রবার এক স্থানীয় চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে বললেন, ‘ডাক পেলে দিল্লি আসব। শপথেও ডাক পেলে আসব।’ রেস কোর্স রোডে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে স্বামীর সঙ্গে থাকতেও রাজি। তবে স্ত্রীর হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়াটাই তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে জানিয়েছেন যশোদাবেন।
ভারতে এ পর্যন্ত যত জন দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের পরিবার সঙ্গে থেকেছে। দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে তিন মূর্তি ভবনে থাকতেন ইন্দিরা। মোরারজি দেশাইয়ের ছেলেরা, পি ভি নরসিংহ রাওয়ের সন্তানরাও সঙ্গে থাকতেন। অটলবিহারী বাজপেয়ী বিয়ে না করলেও রেস কোর্স রোডে বাসভবনে থাকতেন তাঁর পালিতা কন্যা। আর মোদি রেস কোর্স রোডে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে প্রবেশ করতে চলেছেন আগামী সোমবার। সেখানে তিনি যদি একা থাকেন তবে সেটি হবে ব্যাতিক্রমী ঘটনা।
অবশ্য নিজের শপথ অনুষ্ঠানে মাকে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন মোদি। কিন্তু শারীরিক অবস্থার কারণে তাঁর দিল্লি আসার সম্ভাবনা কম।
এবারের নির্বাচনে প্রার্থীর হলফনামায় স্ত্রী যশোদাবেনের নাম উল্লেখ করে তাঁকে প্রকাশ্যে স্বীকৃতি দিয়েছেন মোদি।এখন প্রশ্ন হল, তবে তাঁকে কি রেস কোর্স রোডে থাকার ডাক পাঠাবেন প্রধানমন্ত্রী?
তার শপথের অনুষ্ঠানে ডাক পেয়েছেন দেশ বিদেশের অনেক রথী-মহারথী- বলিউডের তারকারাও বাদ যাননি। এখন প্রশ্ন হল: রজনীকান্ত, অমিতাভ বচ্চন, লতা মঙ্গেশকর, সলমন খানদের সঙ্গে যশোদাবেনকেও কি দেখা যাবে? এর উত্তর জানেন শুধু মোদি।
তবে স্বামীর কাছ থেকে ডাক না পেলেও কোনো অনুযোগ নেই যশোদাবেনের। কয়েক যুগ পর মোদি যে তাকে স্ত্রী বলে প্রকাশ্যে স্বীকৃতি দিয়েছেন, এতেই তিনি খুশি! এই জীবনে আর কিছুই তার চাইবার নেই, এমনকি ভারতের নয়া প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছ থেকেও নয়!