পুতিনের ঘোষণা : পরমাণু অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়ার শঙ্কা

SHARE

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মঙ্গলবারের ঘোষণার আগেই অস্তিত্ব সংকটে ছিল পরমাণু অস্ত্র সীমিত রাখার একমাত্র কার্যকর চুক্তি। অংশগ্রহণ স্থগিতের ঘোষণার মধ্য দিয়ে চুক্তিটি ধরে রাখা কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, পুতিনের ঘোষণার মধ্য দিয়ে নতুন করে শুরু হতে পারে পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের ভাষ্য, পরমাণু অস্ত্র বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সামনে বাধা ছিল এ চুক্তি। সেটি অমান্যের মধ্য দিয়ে সূক্ষ্ম অনেক হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে। একই সঙ্গে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র চীন, ভারত কিংবা পাকিস্তান নতুন করে অস্ত্র তৈরিতে উৎসাহ পেতে পারে।
ইউক্রেনে গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া যুদ্ধের প্রায় এক বছর পর দেয়া বক্তব্যে পুতিন ২০১০ সালে স্বাক্ষরিত ‘নিউ স্টার্ট’ নামের চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা না দিলেও সেটিতে অংশগ্রহণ স্থগিতের কথা বলেছেন। এ ‍চুক্তির মধ্য দিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত ওয়ারহেডের সংখ্যা সীমিত করা হয়।
পরমাণু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুক্তিতে কোনো পক্ষেরই অংশগ্রহণ স্থগিতের সুযোগ নেই। এখানে একমাত্র সুযোগ হলো চুক্তি থেকে সরে আসা।
পুতিন তার বক্তব্যে বলেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পরমাণু অস্ত্র বিবেচনায় নিলেই কেবল তিনি পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসবেন। এ শর্তের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
রুশ প্রেসিডেন্ট তার অবস্থানে অনড় থাকলে পুরো চুক্তিই নতুন করে লিখতে হবে।
এ নিয়ে লন্ডনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের কৌশল, প্রযুক্তি ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণবিষয়ক পরিচালক উইলিয়াম আলবার্ক রয়টার্সকে বলেন, নিউ স্টার্টের বাইরে থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে রাশিয়া, তবে দেশটি এর দায় চাপাতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর।
টেলিফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে আলবার্ক বলেন, ‘চুক্তি যে আর টিকছে না, তা নিয়ে এরই মধ্যে হিসাব-নিকাশ করে ফেলেছে তারা (রাশিয়া)। এখন চেষ্টা থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর প্রকৃত ক্ষতি চাপানোর।’
প্রতি ক্ষেপণাস্ত্রের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার ওয়ারহেডের সংখ্যা বেঁধে দেয় নিউ স্টার্টার ‍চুক্তি। এ থেকে সরে আসার পরপরই ওয়ারহেডের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করেন আলবার্ক।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক বিজ্ঞানীদের সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টস জানায়, রাশিয়ার কাছে পরমাণু ওয়ারহেড আছে ৫ হাজার ৯৭৭টি। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের আছে ৫ হাজার ৪২৮টি।