কিশোরগঞ্জে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় মীমাংসাকারী আনোয়ারা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি শহরের ছাহেরা মাহমুদ আরিফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি। ওই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৩) স্কুলে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পরও ৩০ হাজার টাকায় মীমাংসা করিয়ে দেওয়ার কারণে তাকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সাইফুর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আনোয়ারাকে আজ বুধবার আদালতে তোলা হবে।
ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পরও অভিযুক্ত ধর্ষকদের হাতেনাতে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়নি। বরং মীমাংসার নামে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়া। আর টাকা ভাগাভাগি করার অভিযোগ উঠেছে আনোয়ারা ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
গতকাল রাত ৯টার দিকে আনোয়ারাকে গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সোমবার স্কুল ছুটির পর স্কুলের নাইটগার্ড রফিকুল ইসলাম পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীটিকে কৌশলে আটকে রাখে। পরে নাইট গার্ড রফিকুল ইসলাম ও তার বন্ধু জালাল উদ্দিন তাকে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে এলাকাবাসী টের পেয়ে স্কুল ঘেরাও করে মেয়েটিকে উদ্ধার এবং দুই ধর্ষককে হাতেনাতে আটক করে। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আনোয়ারা ঘটনাটি পুলিশকে না জানিয়ে স্কুলের পাশেই তার নিজ বাসায় বসে দুই পক্ষকে নিয়ে মীমাংসায় বসেন। গভীর রাত পর্যন্ত আলোচনার পর দুই ধর্ষকের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করে তাদের ছেড়ে দেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্যাতিত মেয়েটিকে আদায় করা টাকা না দিয়ে আনোয়ারা ও সালিসে উপস্থিত প্রভাবশালীরা ওই টাকা বাটোয়ারা করে নেন। এছাড়াও মেয়েটি ও তার পরিবারকে পুলিশের কাছে নালিশ করতেও মানা করে দেন তারা।
গতকাল এ ব্যাপারে আনোয়ারার কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘মেয়েটি খারাপ প্রকৃতির। মেয়েটি স্বেচ্ছায় এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এ নিয়ে আইনের ঝামেলায় যেতে চাই না। তাই ৩০ হাজার টাকা আদায় করে মীমাংসা করে দিয়েছি।’
সাংবাদিকদের করা ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা গেছে, আদায় করা ৩০ হাজার টাকা ধর্ষক জালালউদ্দিন দিয়েছে।
বিষয়টা ৩০ হাজার টাকা দিয়ে রফা করা হয়েছে কিনা- এর উত্তরে আনোয়ারা খাতুন বলেন, ‘একটা ছোট মেয়ে, মামলায় জড়ালে কী হবে সেজন্য আপোস মীমাংসা করা হয়েছে।’