দশম জাতীয় সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করছে আওয়ামী লীগ। আজ রবিবার বিকাল সাড়ে তিনটায় শপথ নিবে নতুন মন্ত্রিসভা। বঙ্গভবনে এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজারো অতিথি উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে খালেদা জিয়াকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বিকাল সাড়ে তিনটায় প্রথমে প্রধানমন্ত্রী, পরে মন্ত্রীরা শপথ নিবেন। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা শপথ নিবেন। ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকা অনুমোদন করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। নয়া মন্ত্রিসভায় কমপক্ষে ২৭ জন মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী এবং ২ জন উপমন্ত্রী শপথ নিতে যাচ্ছেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন। মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা আপাতত ৫০-এর মধ্যে সীমিত থাকতে পারে।
এদিকে মন্ত্রিসভায় কারা আসছেন- এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগদলীয় এমপিদের আগ্রহ বেশি। এ নিয়ে বেশ টেনশনে রয়েছেন সর্বদলীয় সরকার গঠনের আগে মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়া মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরাও। সবাই উদগ্রীব হয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সর্বশেষ খবর রাখছেন। তবে নতুন এই মন্ত্রিসভা নতুন মুখ থাকছেন কে কে তা নিয়েও চলছে বেশ আগ্রহ।
জানা গেছে, নীলফামারী-২ আসনের এমপি আসাদুজ্জামান নূর, জামালপুর-৩ আসনের এমপি মির্জা আজম, চাঁদপুর-২ আসনের এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম,রাজশাহী-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহরিয়ার আলম, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের এমপি ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান পাপন, গাজীপুর-৪ আসনের এমপি সিমিন হোসেন রিমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, খুলনা-৫ আসনের এমপি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, ঢাকা-৩ আসনের এমপি নসরুল হামিদ বিপু, নাটোর-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক থাকছেন নয়া এই মন্ত্রিসভায়।
এছাড়া শেরপুর-১ আসনের এমপি আতিউর রহমান আতিক, নওগাঁ-৪ আসনের এমপি ইমাজউদ্দিন প্রামানিক, বান্দরবানের বীর বাহাদুর উশৈ সিং, চট্টগ্রাম-১৩ আসনের এমপি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, গাজীপুর-১ আসনের এমপি আ ক ম মোজাম্মেল হক, মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি সৈয়দ মহসিন আলী, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মানিকগঞ্জ থেকে নির্বাচিত এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের এমপি ছায়েদুল হকও থাকছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
সুনামগঞ্জ-৩ আসনের এমপি এমএ মান্নান, পাবনা-৪ আসনের এমপি শামসুর রহমান শরীফ ডিলু, মাগুরা-২ আসনের এমপি বীরেন শিকদার, ময়মনসিংহ-৪ আসনের সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, ভোলা-৪ আসনের এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং নেত্রকোনা-২ আসনের এমপি আরিফ খান জয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এ দফায় না হলেও পরবর্তী সময়ে মন্ত্রী হতে পারেন।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। প্রধান বিরোধীদল বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়া এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩২টি, জাতীয় পার্টি ৩৩ টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ছয়টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) পাঁচটি, জাতীয় পার্টি (জেপি) একটি, বিএনএফ একটি, তরিকত ফেডারেশন একটি এবং স্বতন্ত্র ১৩টি আসন পায়।
রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে নির্বাচন হয়নি আটটি আসনে। ৮ জানুয়ারি নির্বাচনী ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করা হয়। এর পরদিনই নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেন। নির্বাচনী আইন সংক্রান্ত জটিলতায় যশোর- ১ ও ২ আসনের সাংসদদের নাম গেজেটে না থাকায় তারা শপথ নিতে পারেননি। এছাড়া ওইদিন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ পাঁচজন শপথ নেননি। পরে ১১ জানুয়ারি এরশাদ, নাসিম ওসমানসহ কয়েকজন শপথ নেন।