আগামী ১৭ মার্চের মধ্যে ক্লাস পরীক্ষা চালু না করলে ১৮ মার্চ থেকে আমরণ অনশনের হুমকি দিয়েছেন তারা।
শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের নিকট ডায়না চত্বরের পাশে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ হুমকি দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা পেয়ে শিক্ষার্থীরা টিএসসিসির পূর্ব পাশের করিডোরে বসে পড়ে। পরে বেলা পৌনে ১১টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. ত ম লোকমান হাকিম ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করেন।
এসময় প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। তারা বলেছেন, ক্লাস পরীক্ষা চালু হতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।’
একথা শুনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন এবং কবে থেকে ক্লাস পরীক্ষা চালু হবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা দাবি করেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার সাহা, সহসভাপতি মিজানুর রহমান মিজু ও এমদাদুল হক সোহাগসহ ছাত্রলীগের ২০/২৫ জন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
পরে ছাত্রলীগের নেতারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। পরে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ক্লাস পরীক্ষা চালুর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
মিছিল শেষে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষা চালুর দাবিতে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ ডায়না চত্বর সংলগ্ন সড়কে আলাদাভাবে মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আগামী ১৭ মার্চের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস পরীক্ষা না হলে ১৮ মার্চ থেকে আমরণ অনশনে যাবেন তারা।’
সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার বিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম চৌধুরী সমকালকে বলেন, ‘ভিসি, প্রোভিসিসহ উর্ধ্বতন ব্যক্তিরা ক্যাম্পাসে উপস্থিত না থাকায় ক্যাম্পাসে অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে ও নিরাপত্তার জন্যে শিক্ষার্থীদের মিছিল করতে দেওয়া হয়নি।’
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. ত ম লোকমান হাকিম সমকালকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
ছাত্রলীগের মিছিলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তারা দলীয় কর্মসূচি পালন করেছে। এটা যে কোনো সংগঠন করতে পারে।’
প্রসঙ্গত গত বছরের ৩০ নভেম্বর বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিহতের জের ধরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ৩৭ দিন বন্ধ ছিল। ছুটি শেষে ৭ জানুয়ারি আবাসিক হল ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হলেও ৯ জানুয়ারি শিবিরের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জরুরি সিন্ডিকেট ডেকে আবার বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। এর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।