২০ দলীয় জোটের টানা হরতাল-অবরোধের ৬৭ দিনে অন্তত ১৫ হাজার রাউন্ড গুলি খরচ করতে হয়েছে পুলিশকে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরের বরাত দিয়ে শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দৈনিক কালের কণ্ঠ। প্রতিবেদনে বল হয়, এ সময় পুলিশের প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুলিশের শতাধিক যানবাহন; আহত হয়েছেন দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য। এর মধ্যে ঢাকায় একজনের মৃত্যুও হয়েছে। অতিরিক্ত ডিউটি করায় ওভারটাইম দিতে হচ্ছে। অতিরিক্ত কাজের চাপে অনেক পুলিশ সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এবং তাদের চিকিৎসায় ব্যয় হচ্ছে বাড়তি অর্থ।
গাড়ির জ্বালানি তেল ও অতিরিক্ত ডিউটিরত সদস্যদের খাবারের পেছনে খরচ হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। অনেক সদস্যের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
পুলিশ সদরের এক কর্মকর্তা বলেন, আন্দোলনের নামে ২০ দলীয় জোট দেশের সম্পদ নষ্ট করছে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে। এতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে। এর পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।
তিনি আরো বলেন, মানিকগঞ্জ, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিলেট, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, রংপুর, বরিশাল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, জামালপুরসহ আরো কয়েকটি জেলায় নাশকতা প্রতিরোধ করতে গিয়ে পুলিশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নাশকতাকারীদের হামলায় ২০০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তার মধ্যে ঢাকার মৎস্য ভবনের সামনে পেট্রলবোমায় কনস্টেবল শামীম মারা গেছেন। সর্বশেষ গত ৯ মার্চ রাতে পল্টনে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় দুই সাব-ইন্সপেক্টর আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ-হরতালের কারণে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সদস্যদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। অবরোধ-হরতালে পুলিশ সদস্যদের অতিরিক্ত নাশতা দেওয়া হয়। শুধু নাশতাবাবদ দৈনিক ব্যয় বেড়েছে এক লাখ আট হাজার ৮০০ টাকা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জ্বালানি ব্যয়ও।
সিএমপিতে গত অর্থবছরে নগর পুলিশের জ্বালানি ব্যয় ছিল প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের ছয় মাস বাকি থাকতেই ব্যয় হয়ে গেছে প্রায় সাত কোটি ১০ লাখ টাকা। এ কারণে জ্বালানি ব্যয় নির্বাহের জন্য অতিরিক্ত পাঁচ কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দের জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরে।
এ ব্যাপারে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, হরতাল-অবরোধের কারণে পুলিশের অতিরিক্ত পরিশ্রম হচ্ছে। আর্থিক ক্ষতি হওয়া তো স্বাভাবিক। নাশকতার নামে বিএনপি-জামায়াত জোট সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। যানবাহনে পেট্রলবোমা মেরে ব্যাপক ক্ষতি করছে। নাশকতাকারীদের ধরতে পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে। তবে দেশের পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেকটা ভালো।