দুর্ঘটনা রোধে নতুন রেললাইন স্থাপনে আন্ডার পাস সিস্টেম: রেলপথমন্ত্রী

SHARE

রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এমপি বলেছেন, দুর্ঘটনা রোধে নতুন যে সমস্ত রেললাইন বসানো হচ্ছে সেগুলোতে আন্ডার ও ওভার পাস সিস্টেম রাখা হচ্ছে। এতে করে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানিও ঘটবে না। যেগুলো পুরোনো অনেক আগে থেকে আছে সেগুলোতে আর রেললাইন ওঠানামা করা সম্ভব না।

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে নীলফামারী সদরের কুন্দুপুকুরের মনষাপাড়া গ্রামের বউবাজার এলাকায় রেল দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, রেললাইনের উপর দিয়ে এখন এলজিইডির অনেক রাস্তা হয়েছে, সড়ক জনপদের অনেক রাস্তা হয়েছে। ওইসব স্থানে তারা রেল ক্রসিং দেয়ায় দুর্ঘটনা ঘটে প্রাণহানি হলেই দায় আসছে রেলওয়ের উপর। আমরা তাদের সাথে বসেছি। নতুন করে আপনারা যে রাস্তা, রেল ক্রসিং করছেন এগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনাদের। আমরা যেগুলো রেলগেট করি সেগুলো আমাদের রেলের নিরাপত্তার জন্য। সাধারণ মানুষের চলাচলের যে দায়িত্ব সেটা এটা স্থানীয় সরকারের। ইউনিয়ন পরিষদ হলে ইউনিয়ন পরিষদের, পৌরসভা হলে পৌরসভার, উপজেলা পরিষদের হলে উপজেলা পরিষদের। এটা তাদের দায়িত্ব। কোনো দুর্ঘটনার দায় সম্পূর্ণ রেলের ওপর চাপিয়ে দেয়া সঠিক না।

রেলমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ অনেক ঘনবসতিপূর্ণ। রেল লাইনের ধারে অনেক জায়গা আছে যেগুলো ব্যবহার হচ্ছে না। অনেক ভূমিহীন পরিবার ওইসব জায়গায় ঘর তুলে আছেন। যে তিন শিশু নিহত হয়েছে ওই পরিবারটাও রেলের জায়গায় আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ নিয়েছেন ভূমিহীনদের ঘর করে দেয়ার। সে কার্যক্রম চলমান আছে। হয়তো তাদেরও নাম আছে। অল্প সময়ে হয়তো তারা এখান থেকে চলে যাবেন নতুন ঠিকানায়।

ভারতের বর্ডার খুললেই চলাচল শুরু হবে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন মন্তব্য করে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, করোনার কারণে ভারত তাদের সকল বর্ডার গুলো বন্ধ রেখেছে। ভরতের বর্ডার খুললেই চিলাহাটি হলদিবাড়ি রেলপথ দিয়ে নিয়মিত চলাচল শুরু করবে উদ্বোধন হওয়া ঢাকা-শিলিগুড়ি মৈত্রি ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস।

নীলফামারী সদরের কুন্দুপুকুরের মনষাপাড়া গ্রামের বউবাজার এলাকায় রেল দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে ও নিহতদের পরিবার বর্গকে সমবেদনা জানিয়ে স্বজনদের চাকরির আশ্বাস দেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

বউবাজারে স্থানীয়দের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত শোকসভায় যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, এখানে একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। একই পরিবারের তিন শিশু নিহত হয়েছে। ওই শিশুদের বাঁচাতে গিয়ে আরো একজন নিহত হয়েছেন। পরিবার দুটির যে ক্ষতি হয়েছে, সেটা পুষিয়ে দেয়ার ক্ষমতা কারো নেই।

ওই সভায় স্থানীয়রা মন্ত্রীর কাছে নিহত তিন শিশুর বাবা রেজওয়ান আলীকে এবং শিশুদেরকে বাঁচাতে গিয়ে নিহত সালমান ফার্সির স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার সুমিকে রেলে চাকরি দেয়ার আবেদন করেন।

রেলমন্ত্রী আবেদন দুটি গ্রহণ করে উপস্থিত রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেন, অস্থায়ীভাবে নিহত তিন শিশুর বাবা এবং তাদেও বাঁচাতে গিয়ে নিহত শামীমের স্ত্রীকে চাকরি দেয়ার ব্যবস্থা নিতে।

পরে নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নিহত সালমান ফার্সি শামীমের স্ত্রীকে ২০ হাজার টাকা এবং নিহত ৩ শিশু লিমা, শিমু ও মমিনুরের বাবাকে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এসময় জেলা প্রশাসনের পক্ষেও সালমান ফার্সি শামীমের স্ত্রীকে ২০ হাজার টাকা এবং তিন শিশুর বাবাকে ২৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।