মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে বাড়ছে বিনিয়োগ প্রস্তাব

SHARE

করোনা পরিস্থিতি বিশ্ব অর্থনীতিতে নিয়ে এসেছিল স্থবিরতা। তবে পরিস্থিতির ক্রমোন্নতির ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি ও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে গতি ফিরছে। মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতি।

করোনা মহামারির কারণে গত বছর বৈশ্বিক বিনিয়োগ কমেছিল ৩৫ শতাংশ। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা-আঙ্কটাডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ কমেছিল ১১ শতাংশ। তবে চলতি বছর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ফের বাড়ছে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) জানিয়েছে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে প্রায় ২০ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। যা গত অর্থবছরের তুলনায় ৪৬ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে মোট বিনিয়োগ প্রস্তাব ছিল ১৩ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকার।

বিডার জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার গণমাধ্যমকে জানান, মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে দেশে সার্বিক বিনিয়োগ প্রস্তাব বেড়েছে। দেশি-বিদেশি এ বিনিয়োগ প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দেশে নতুন করে প্রায় ২৯ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

বিডায় নিবন্ধিত শিল্পের ত্রৈমাসিক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে জানা যায়, এ সময়ে ১৮৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিডার কাছে বিনিয়োগের প্রস্তাব পাওয়া গেছে। যার মধ্যে স্থানীয় ১৭৭টি প্রতিষ্ঠান ১৮ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চেয়েছে। বিনিয়োগের এ পরিমাণ গত বছরের চেয়ে ৫ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা বেশি।

স্থানীয় পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে রাসায়নিক শিল্প খাতে। সেবা, প্রকৌশল ও টেক্সটাইল খাতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে।

চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে সাতটি শতভাগ বিদেশি ও পাঁচটি যৌথ মালিকানার প্রতিষ্ঠান মোট এক হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছে। গত অর্থবছরে শতভাগ বিদেশি ও যৌথ মালিকানা মিলিয়ে ২০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ১ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছিল।

চলতি বছর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছেন কৃষি খাতে। একইসঙ্গে টেক্সটাইল, সেবা ও প্রকৌশল খাতেও উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি জানিয়েছেন, প্রতিবছর দেশে মোট দেশজ আয় (জিডিপি) যেভাবে বাড়ছে, সে আকারে বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে আগামী দুয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের বিদেশি বিনিয়োগ দুই থেকে তিন গুণ বেড়ে যাবে।