অল্পবয়েসী ব্রিটিশ মুসলিম তরুণীরা কেন জিহাদিদের সাথে যোগ দেবার জন্য সিরিয়ায় যাচ্ছে?
একজন তরুণী বিবিসির নিউজনাইটকে বলেছেন, ইউটিউবে প্রচারণামূলক ভিডিওতে দেখা ‘জিহাদিদের যৌন আবেদন’ তাদের উগ্রপন্থায় আকৃষ্ট হবার পেছনে একটা বড় কারণ।
গত কয়েক মাসে বেশ কিছু ব্রিটিশ তরুণী জিহাদিদের সাথে যোগ দেবার জন্য তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় গেছে। সবশেষ দুজন বাংলাদেশী-বংশোদ্ভূত স্কুলছাত্রীসহ পূর্ব লন্ডনের তিন তরুণীর সিরিয়ায় চলে যাবার খবর ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
কেন এই তরুণীরা উগ্রপন্থার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে? এই প্রশ্নের জবাব দিতে বিবিসির সাথে কথা বলেছেন আয়েশা নামের মধ্য ইংল্যান্ডের বাসিন্দা একজন ব্রিটিশ তরুণী যিনি নিজেও কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ইসলামী উগ্রপন্থার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, ইসলামিক স্টেট তাদের যোদ্ধাদের শারীরিক আকর্ষণকে তরুণী মেয়েদের আকৃষ্ট করার জন্যবিজ্ঞাপন হিসেবে ব্যবহার করতে অনাগ্রহী নয়।
আয়েশা নিউজনাইটকে বলছেন, তার যখন বয়েস ১৬-১৭ তখন তিনি ইসলামিক স্টেট নয়, বরং তার পূর্বসূরী আল-কায়েদা বা আল-শাবারের ভিডিও দেখতেন এবং সেগুলোকে তার খুবই ‘আকর্ষণীয়’ এবং ‘গ্ল্যামারাস’ বলে মনে হতো।
“আমার মনে হতো, আমি তো এমন একজনকে পেতে পারি যে আমার নিজ ধর্মের – কিন্তু আবার ভিনদেশী – ব্যাপারটা খুবই উত্তেজনাকর। যাকে বলা যায়, অজানার আকর্ষণ।”
“তার পর ফেসবুকে হয়তো এমন একজন লোকের ছবি দেখলাম যে শহীদ হয়েছে, দেখে আমার মনে হতো – হায়, এই লোকটিকেই তো আমি অন্য একটি ভিডিওতে দেখেছি – আর এখন সে মারা গেছে!”
আয়েশা বলেন, তখন এমন অনুভূতি হতো যে ‘মারা যাবার আগেই এমন একজন লোককে পেতে হবে’।
“মনে হতো, তাহলে তিনি মারা যাবার পর তার সাথে বেহেশতে দেখা হবে” – বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ব্রিটেনে ইসলামী নেতারা তাদের বক্তৃতায় এই দেশকে বিধর্মী, শত্রু, এবং মুসলিম-হত্যাকারী রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরেন। “বলা হয় এই রাষ্ট্র ও পুলিশকে বিশ্বাস না করতে এবং সরকারি স্কুলে ছেলেমেয়েদের না পাঠিয়ে ইসলামী স্কুলে পাঠাতে। সালাফি ও ওয়াহাবীরা মনে করে যে ব্রিটেন একদিন শরিয়া রাষ্ট্র হবে। তারা অমুসলিম ব্রিটিশ মেয়েদের নিয়ে বিদ্রুপ করে।”
তবে আয়েশা বলেন, “আমি যে ধর্মীয় গোষ্ঠীর সদস্য ছিলাম, তারা ধর্মের সীমার ভেতরে নারীপুরুষের সাম্য উৎসাহিত করতে চাইলেও – কোন কোন ক্ষেত্রে তারা যে নারীদের প্রতি সুবিচার করতে পারছে না এটা আমি দেখতে পেতাম। তা ছাড়া আরেকটি ব্যাপার ছিল যে অমুসলিমদের হত্যা করতে হবে। প্রধানত এ দুটি জিনিসই আমাকে এই পন্থা থেকে সরিয়ে নিয়ে আসে।”
আয়েশা আরো বলেন, ‘জিহাদি জন’ বলে পরিচিত মোহামেদ এমওয়াজিকেও তার পুরোনো বন্ধুরা একজন আদর্শ হিসেবে দেখে বলেই তিনি মনে করেন।