আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগু্প্ত বলেছেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় কোনো প্রক্সি মন্ত্রণালয় নয়, রাষ্ট্রে দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় রয়েছে অতীব জরুরি। এর একটি হলো-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় অপরটি পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। এই দুই মন্ত্রণালয় ছাড়া বাকিগুলো ভগ্নিপতি ও সেনাপতিদের। তাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে ফুল মন্ত্রিত্ব প্রয়োজন। এখন আইন জানা ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন লোকদের দিয়ে এই মন্ত্রণালয় চালাতে হবে।”
সোমবার রাজধানীর ডিপ্লমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সিটিউট মিলনায়তনে নৌকা সমার্থক গোষ্ঠী আয়োজিত চলমান রাজনীতি বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ ও হত্যা ঘটনায় অভিযুক্ত নূর হোসেনকে উদ্দেশ্য করে সুরঞ্জিত বলেন, “এই মাল তো আওয়ামী লীগের না। এটা সুবিধাবাদী। সে আগে করেছে জাতীয় পার্টি, পরে বিএনপি এখন আওয়ামী লীগ করছে।”
তিনি বলেন, “সরকারের একজন মন্ত্রী বলেছে, খুনিরা এখনো দেশে আছে। আমি বলব, খুনিরা দেশে আছে, দেশ ছেড়েছে বা পাতালে গেছে সেটা বিষয় না। তাদের গ্রেফতার করতেই হবে।”
নারায়ণগঞ্জের হত্যাকাণ্ডের দায় সরকার এড়াতে পারে না উল্লেখ করে সুরঞ্জিত বলেন, “এই হত্যার সঙ্গে ক্ষমতাশীনদের আশ্রয়-প্রশ্রয় থাকা অস্বাভাবিক নয়। সাতটি লাশ উদ্ধার হলো, কিন্তু এরপরে এতদিন পার হয়ে গেলেও খুনির বাড়ি যেতে এত দেরি করা হলো কেন?”
তিনি বলেন, “এই বিলম্ব অমার্জনীয়, ঘৃণিত, এটাকি মগের মূল্লুক? কার মুখ কে বন্ধ করবে? গণমাধ্যম উন্মুক্ত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে যে ভয়াবহ খবর বের হয়েছে। সেটা তো আরো ভয়াবহ। দোষী ব্যক্তি যেই হোক তাকে বের করে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “নারায়ণগঞ্জে প্রাশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যাদের প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। তাদের শুধু প্রত্যাহার করলেই হবে না, ক্রিমিনাল লিগিজেন্স করে থাকলে এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় বিচার করতে হবে।”
সাদা পোশাকে গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গ্রেফতারের সময় অবশ্যই আইডি কার্ড দেখাতে হবে।”
তিনি বলেন, “নজরুলের শ্বশুর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে সেটা উড়িয়ে দেয়া যায় না। আমি তখনও বলেছি এখনও বলছি বর্তমান সরকারের জন্য দুটি চ্যালেঞ্জ। একটি সুশাসন নিশ্চিত করা অপরটি আইনশৃঙ্খলার উন্নতি করা।”
সুরঞ্জিত বলেন, “আমি গরিব, কোনো কথা বললে সেটা ভুল হয়। কিন্তু শামীম ওসমান বলছে এক কথা। আইভী রহমান বলছে আরেক কথা। একে অপরের বিরুদ্ধে বলছে। তবে যে বা যারাই করুক তাদের বিরুদ্ধে কোনো রকম নমনীয়তা প্রদর্শন করা ঠিক হবে না। এটা সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তির ব্যাপার।”
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে সুরঞ্জিত বলেন, “এরশাদ যদি আপনার স্বামীর হত্যাকারী হয় তবে মামলা করুন। বিচারের আওতায় আনুন। আমরা সব হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। ফৌজদারি মামলা যেকোনো সময় করা যায়। তামাদি হয় না। আপনি মামলা করেন। নয়তো বুঝব এটা আপনার স্টান্ডবাজি। মুখে বলেন একটা করেন আরেকটা।”
অনুষ্ঠানে সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য চিত্ত রঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাম্যবাদী দলের নেতা হারুন চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা দিদার হোসেন, নৌকা সমর্থক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ।