ভারতের বিরোধীদল বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গের একটি নির্বাচনী জনসভায় ঘোষণা দিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে ‘বাংলাদেশী’ অনুপ্রবেশকারীদের বাক্স-প্যাঁটরা গুছিয়ে সীমান্ত পার করিয়ে দেয়া হবে।
রোববার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুরে সংগীত শিল্পী বাপ্পি লাহিড়ীর সমর্থনে নির্বাচনী জনসভায় মোদি এ ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে দায়ী করে গুজরাট দাঙ্গায় মুসলিম নিধনে অভিযুক্ত এই হিন্দুত্ববাদী নেতা বলেন, “বিহারি, মারোয়াড়ি বা ওডিশার মানুষদের মমতা পর মনে করেন। কিন্তু বাংলাদেশীদের দেখলেই তার মুখ ঝকঝক করে ওঠে। তবে ক্ষমতায় এলে ‘বাংলাদেশী’ অনুপ্রবেশকারীদের ভারত থেকে ফেরত পাঠানো হবে।”
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে এক নির্বাচনী জনসভায় মমতা ব্যানার্জি হিন্দিভাষীদের পশ্চিমবঙ্গের অতিথি হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন। রোববার নেরেন্দ্র মোদি মমতার ওই কথার জবাবে ‘বাংলাদেশী’ বিতারণের ঘোষণা দিলেন।
ওই জনসভায় মমতার ব্যানার্জিকে আক্রমণ করে বক্তৃতা শুরুতেই মোদি বলেন, “বাংলার মাটি সরস্বতীর পীঠ। বহু জ্ঞানী-গুণী বিদ্বান এক সময় এই মাটিতে জন্মেছিলেন। সরস্বতীর অন্য নাম সারদা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে সেই সারদা এখানে চিটফান্ড হয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে।’”
মোদি বলেন, “প্রথমে ওর (মমতা) ছবি বিক্রি হতো চার লাখ টাকায়, পরে তা বেড়ে আট ও ১৫ লাখে পৌঁছায়৷ শেষ পর্যন্ত তিনি এতো ভালো ছবি আঁকতে শুরু করলেন যে, এক কোটি ৮০ লাখ টাকায় মমতার আঁকা ছবি বিক্রি হতে লাগল। এমন শিল্পী মানুষ মুখ্যমন্ত্রী, ভালোই তো। কিন্তু, কে কিনল সেই ছবি? কার ঘরে সাজানো হলো? সে কথা জানার পুরো অধিকার আছে দেশের মানুষের।”
মমতাকে আক্রমণ করে দেয়া এই বক্তৃতার জবাবে রোববার রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, “গুজরাটের দাঙ্গারাজ (একই সঙ্গে দাঙ্গার রাজা ও দাঙ্গার রাজত্ব অর্থে) আকাশ থেকে নেমে এসে বাংলার উন্নয়নের মডেলের কোনো উত্তর খুঁজে পাননি। তাই ব্যক্তিগত আক্রমণে মেতেছেন। দাঙ্গারাজ বলেছেন, দিদি ছবি বেচে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা পকেটস্থ করেছেন! তিনি এ কথা প্রমাণ করুন, নয়তো মানহানির মামলার মুখে তাকে পড়তে হবে!”
মমতার ছবি ব্যক্তিগত কোনো লাভের জন্য নয়, বরং নির্বাচনের তহবিল সংগ্রহের জন্য বিক্রি করা হয়েছিল বলে ডেরেক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, মোদি ভিত্তিহীন ব্যক্তিগত আক্রমণ করলে তারাও এমন কথা জিগ্গেস করতে পারেন। তার প্রশ্ন, “গুজরাটের দাঙ্গারাজ নিজের স্ত্রীর খোঁজ নেন না। দেশের দায়িত্ব তিনি নেবেন কী ভাবে?”