বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার বাড়াতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য সাশ্রয়ি রাখতে হবে। কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা অন্যতম চ্যালেঞ্জ। সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ এখনও বেশি, জমিও বেশি লাগে। যদিও নেট মিটারিং সিষ্টেম কিছুটা খরচ সাশ্রয় করবে।
প্রতিমন্ত্রী আজ সচিবালয়ে ১০টি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অনুমোদন বাতিল প্রসংঙ্গে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়কালে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। নেপালের সাথে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এলএনজি-এর ব্যবহারও বাড়তে পারে। ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়ণযোগ্য জ্বালানি হতে ৪০% বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী এসময় বলেন, যে সকল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয় এরূপ ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে। প্রকল্পগুলো হলো- পটুয়াখালী ২ী৬৬০ মে.ও. কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, উত্তরবঙ্গ ১২০০ মে.ও. সুপার থারমাল পাওয়ার প্ল্যান্ট, মাওয়া ৫২২ মে.ও. কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা ২৮২ মে.ও. কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, চট্টগ্রাম ২৮২ মে.ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, খুলনা ৫৬৫ মে.ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, মহেশখালী ১৩২০ মে.ও. কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, মহেশখালী ১৩২০ মে.ও. কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ৭০০ মে.ও. আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, সিপিজিসিবিএল-সুমিতোমো ১২০০মে.ও. আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প। এই প্রকল্প বাতিল হলেও বিদ্যুৎ সরবরাহে কোন সমস্যা হবে না। আগামীতে এলাকাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
ঢাকা অঞ্চলের ২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে মোট ৮০৪ মেগাওয়াট, চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৫টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে মোট ৪,৬৩২ মেগাওয়াট, বরিশাল অঞ্চলের ১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে মোট ১,২৫০ মেগাওয়াট, রংপুর অঞ্চলের ১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে ১,২০০ মেগাওয়াট ও খুলনা অঞ্চলের ১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে ৫৬৫ মেগাওয়াটসহ মোট ১০টি প্রকল্প বাদ যাওয়ায় ২০৩০ সালে এ অঞ্চলসমূহের নেট উৎপাদন ক্ষমতা, ৮৪৫১ মেগাওয়াট হ্রাস পাবে।
ফলে ২০৩০ সালে ঢাকা অঞ্চলে ৩,৩৯৭ মেগাওয়াট, ময়মনসিংহ অঞ্চলে ১,২২৫ মেগাওয়াট ও রংপুর অঞ্চলে ৬৫৩ মেগাওয়াটসহ মোট ৫২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থাকবে। অপর দিকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৬,৯৫৪ মেগাওয়াট, কুমিল্লা অঞ্চলে ৮০৩ মেগাওয়াট, সিলেট অঞ্চলে ৪৩২ মেগাওয়াট, খুলনা অঞ্চলে ২,০৬০ মেগাওয়াট, বরিশাল অঞ্চলে ৬,১৭২ মেগাওয়াট ও রাজশাহী অঞ্চলে ২,১৬৭ মেগাওয়াটসহ মোট ১৮,৫৮৮ মেগাওয়াট বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা উদ্বৃত্ত থাকবে। সেক্ষেত্রে জাতীয় গ্রিড হতে বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও রংপুর অঞ্চলের বিদ্যুতের চাহিদার ঘাটতি সমন্বয় করা হবে।