যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টে বারাক ওবামা বলেছেন, আমরা ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি না যারা ইসলামকে বিকৃত করছে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা বিষয়ক ৩ দিনব্যাপী হোয়াইট হাউস সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষনে প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন, একটা ভুল ধারণা গড়ে উঠেছে যে ইসলাম এবং পশ্চিমাশক্তি বিরোধে লিপ্ত এটি কেবল ভুল ধারণাই বরং ইসলামের সঠিক মর্মবাণীর বিরুদ্ধে। অবশ্যই যারা খোদার দোহাই দিয়ে মানুষ হত্যার মতো গর্হিত কাজে লিপ্ত তাদের আদর্শ ইসলামের শতকোটি মানুষ সমর্থন করে না। কোনো ধর্ম সন্ত্রাসকে সমর্থন করে না, কোনো ধর্ম সন্ত্রাসে লিপ্ত নয়, মানুষ সন্ত্রাসে লিপ্ত।
তিনি বলেন, যারা আইস’র ইসলামের অর্ন্তনিহিত শিক্ষা থেকে দূরে সরে গিয়ে আইএস’র মতো সন্ত্রাসী সংগঠনে জড়িয়ে পড়ছে।
এর আগে হোয়াইট হাউসের উগ্রবাদী সহিংসতা প্রতিরোধ সম্মেলনে বাংলাদেশের বিষয়ে বার্তা আসছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সারাহ সিওয়াল।
বুধবার ওয়াশিংটনস্থ ফরেন প্রেস সেন্টারে সম্মেলন উপলক্ষে দেয়া প্রিভিউ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি। মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা এবং জনগণের দাবি-দাওয়া আদায়ে সিভিল সোসাইটির প্রতিষ্ঠানগুলোর সুযোগ অব্যাহত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই আহ্বান জানিয়ে আসছে বলেও জানান সারাহ সিওয়াল।
ব্রিফিংটি পরিচালনা করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতের মুখপাত্র মেরি হার্ফ। এ সময় নিউ ইয়র্কস্থ স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফরেন প্রেস সেন্টার থেকে ভিডিও কন্সফারেন্সে যোগ দেন বাংলাদেশের সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী।
এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি উদার মুসলিম দেশ, বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকটময় মুহূর্ত চলছে। গণতান্ত্রিক সমাজে সহনশীলতা অত্যন্ত জরুরি বিশেষ করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য। অথচ বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড চলছে। একটি ভীতিকর পরিস্থিতি চলছে দেশটিতে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বলার চেষ্টা করছে বাংলাদেশে বর্তমানে যা চলছে তা রাজনৈতিক কর্মকান্ড নয় বরং এটি সন্ত্রাসবাদী এবং উগ্রবাদী কর্মকান্ড। অথচ পশ্চিমা দুনিয়ার সব গণমাধ্যমসহ সবাই বিষয়টি অবগত যে, এটি একটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সংকট। কারণ ২০১৪ সালে একটি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে এ সরকার ক্ষমতায় আসে। এ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি।
এ সময় তিনি জানতে চান এমনি একটি বাস্তবতায় বাংলাদেশ এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে সম্মেলনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কি বার্তা থাকবে? জবাবে সারাহ সিওয়াল বলেন, এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ যে এই সম্মেলনের মাধ্যমে উগ্রবাদী সহিংসতা প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে (বাংলাদেশের) সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ উন্মুক্ত হবে। মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং সুশীল সমাজের ভূমিকা প্রসস্ত করা এবং গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামা একাধিকাবার গুরুত্বারোপ করেছেন। তার মতে, বাংলাদেশের বর্তমান বিষয়টি সম্মেলনের ৪র্থ অধিবেশনের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে।
সারাহ সিওয়াল আরো জানান, এ সম্মেলনের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে উগ্রবাদী সহিংসতার বিরুদ্ধে দীর্ঘ মেয়াদি ও টেকসই ব্যবস্থাদি গ্রহণ করার বিষয়াদি নিরুপন করা।