সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. আ স ম হান্নান শাহ বলেছেন, “আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আর মন্ত্রীরা ‘অটো প্রমোশন’ পেয়ে সংসদে বসেছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে নয়।”
বিএনপির শীর্ষ নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমান উল্লাহ আমানসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা জেলা যুবদল আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন।
মানববন্ধনের পরেই প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে দেশপ্রেমিক নাগরিক পার্টি আয়োজিত ‘বর্তমান বাংলাদেশের রাজনীতি, সর্বক্ষেত্রে সরকারের দুর্বৃত্তায়ন প্রতিরোধে সচেতন নাগরিকদের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভাতেও অংশগ্রহণ করেন হান্নান শাহ।
হান্নান শাহ বলেন, “রাজনৈতিক স্বার্থের দিক থেকে বিএনপির সঙ্গে আছে জামায়াত। তাদের কর্মীদের আমরা হত্যা করতে পারি না, হত্যা করেছে সরকারদলীয় কর্মীরা। আর সেই মামলা দেয়া হয়েছে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর।”
সরকারের প্রতি অভিযোগ করে তিনি বলেন, “সরকার কোন আইন না মেনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নেতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠাচ্ছে।”
সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে তিনি বলেন, “সকল রাজবন্দিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন, অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিন।”
সরকারকে উদ্দেশ্য করে হান্নান শাহ বলেন, “আপনারা যে আওয়ামী লীগ আওয়ামীলীগ করেন তা পূর্বের আওয়ামী লীগ নয়, বঙ্গবন্ধু নিজে ১৯৭৫ সালে গণতান্ত্রিক আওয়ামী লীগকে বিলুপ্ত করে নতুন বাকশালি দল গঠন করেছিলেন। আর এই আওয়ামীগ ’৭৫ সালের পর থেকে সেই বাকশালি দল থেকেই এই পর্যন্ত এসেছে।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের জন্ম বাকশালিভাবে বলেই তারা ক্ষমতায় আসলেই বাকশাল কায়েম করে আর ‘অটো প্রমোশন’ নিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখে।”
আওয়ামী লীগ গুম হত্যার রাজনীতি করে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তারা পুলিশ দিয়ে মানুষ হত্যা করায়। গত দুই বছরে প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ গুম ও শত শত মানুষকে হত্যা করেছে তারা। আর তারা বলে জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি করি আমরা। আমরা এমন রাজনীতি করি না, বরং আপনারাই নিজেদের রাজনীতি অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেন।”
এ সময় দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনারা তৈরি হয়ে যান, সরকার পতনের আন্দোলনের জন্য শিগগিরই মাঠে নামতে হবে। সরকার পতন আপনাদেরই ঘটাতে হবে। খুব শিগগিরই আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনে যাব, আপনার প্রস্তুত থাকুন। এই বাকশালি সরকারের পতন ঘটিয়েই ছাড়ব আমরা, সরকার বালুর ট্রাক দিয়ে আর আমাদের থামাতে পারবে না।”
ঢাকা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আলহাজ্ব নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে এবং দেশপ্রেমিক নাগরিক পার্টির চেয়ারম্যান আহ্সান উল্লাহ্ শামীমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেউপস্থিত ছিলেন- বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আহ্বায়ক ছোরাব হোসেন ডালিম, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হানিফ, জিয়াসেনার সাধারণ সম্পাদক মো. মঞ্জুর হোসেন ইসা প্রমুখ।