বাংলাদেশ চাইলে যুক্তরাষ্ট্র করোনার ভ্যাকসিন দেবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।
শুক্রবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে একথা জানান তিনি।
বৈঠককালে কেরি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশ চাইলে তারা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দিতে পারে। কারণ আমেরিকা মধ্য গ্রীষ্মের মধ্যেই এই ভ্যাকসিনের চাহিদা পূরণ করবে। এরপর বাংলাদেশকে তারা কোভিড ভ্যাকসিন দিতে পারবে।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ব্রিফিংয়ে জানান, জন কেরির সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্যারিস চুক্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসা জলবায়ু কূটনীতিতে নতুন গতি তৈরি হবে। প্রধানমন্ত্রী প্যারিস চুক্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসায় ব্যাপক প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ২২-২৩ এপ্রিল আয়োজিত ক্লাইমেট লিডার্স সামিটে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ জানান। জন কেরিও আমন্ত্রণটি গ্রহণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকে বিশেষ দূত জন কেরি দূষণের ঝুঁকি হ্রাসে জলবিদ্যুতের পাশাপাশি সৌরশক্তির মতো বিকল্প শক্তি ব্যবহারের উপর জোর দিয়েছেন। কেরি বলেছেন, মার্কিন সংস্থাগুলো অন্যদের সঙ্গে অংশীদার হয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
তিনি আরও বলেন, ওবামা প্রশাসন গ্রিন জলবায়ু তহবিলকে এক বিলিয়ন ডলার দিয়েছিল। তবে বর্তমান প্রশাসন ১শ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে। কেরি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে আঞ্চলিক ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক বা ত্রিপক্ষীয় উপায়ে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে আগ্রহী।
তিনি বলেন, দেশে ৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন সৌর বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। সেচের জন্য সৌরশক্তি প্রয়োজন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে তার সরকার অন্য উদ্যোগের পাশাপাশি জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল গঠন করেছে। এছাড়াও সরকারি উদ্যোগে ইতোমধ্যে সারা দেশে প্রায় ১১ দশমিক ৫ মিলিয়ন চারা রোপণ করা হয়েছে এবং বেসরকারিভাবে আরো এক কোটি চারা রোপণ করেছিলেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় দিল্লি থেকে বিশেষ প্লেনে জন কেরি ঢাকায় আসেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও তার স্ত্রী সেলিনা মোমেন। এসময় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২২-২৩ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে ৪০টি দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের অংশগ্রহণে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে ক্লাইমেট লিডার্স সামিটের আয়োজন করা হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সশরীরে আমন্ত্রণপত্র নিয়ে আসেন জন কেরি।