ভেতরে প্রতিভা থাকলে তা কেউ চাপিয়ে রাখতে পারে না। জীবনের এ সত্যটিই যেন চরমভাবে উপলব্ধি করেছেন পাকিস্তানের পেসার সোহাইল খান, যিনি হাতের জোর বাড়ানোর জন্য কোনো জিমে যেতে পারেনি, পাহাড় থেকে পাথর ছুড়ে ছুড়ে সেই জোর বাড়িয়েছেন। লাহোর, ইসলামাবাদের মতো বড় বড় শহরে ক্রিকেট একাডেমিগুলো বেশ আধুনিক। ঝাঁ-চকচকে জিমের পাশাপাশি আধুনিক বোলিং মেশিন_ সবই রয়েছে সেখানে। কিন্তু খাইবার পাখতুন প্রদেশ! যার নাম শুনলেই মনে আসবে বোমা-গুলি, উগ্রপন্থি আর মালালা ইউসুফজাই। আবার এ প্রদেশ মানে ইউনিস খান, ওমর গুলের মতো ক্রিকেটার। জানশের খানের মতো স্কোয়াশ তারকাও। আর ক’দিন পর থেকে এই প্রদেশের বাসিন্দাদের নজর থাকবে টিভিতে। কারণ, হঠাৎ করে বিশ্বকাপ দলে ঢুকে পড়েছেন ৩০ বছরের সোহাইল খান। পাহাড়ি নদী আর ঝোরায় সাঁতারকাটা। এই রকম রুক্ষ পাহাড়ি অঞ্চল থেকে সোহেলের উঠে আসা স্বপ্নের মতোই। ক্রিকেট খেলার ইচ্ছে অদম্য। কিন্তু পরিকাঠামো ছিল না মালাকান্দে। অনেক বড় বয়স পর্যন্ত খেলতে হয়েছিল টেনিস বলেই। সোহাইলের কথায়_ ‘আমি ছোট থেকেই চাইতাম ক্রিকেট খেলে নাম করতে। কিন্তু কোনও সুবিধা পেতাম না। সে রকম ভালো মাঠ ছিল না। কোনও জিম নেই।
কেউ একজন বলেছিল, দূরে পাথর ছুড়লে জোরে বল করার ক্ষমতা তৈরি হবে_ ‘এ রকমই একজনের পরামর্শে করাচি চলে আসেন সোহাইল। ছোটখাটো ক্লাবে খেলতে খেলতে হঠাৎ চোখে পড়ে ‘ট্যালেন্ট হান্টে’র বিজ্ঞাপন। ফাস্ট বোলারের সন্ধানে সে উদ্যোগ ছিল সাবেক পাকিস্তানি পেসার সিকান্দার বখতের। নজরে পড়ে যান সোহাইল। এরপর আরও একটি ক্লাব ঘুরে শেষে রশিদ লতিফের একাডেমিতে। সেখানে রশিদই সোহাইলকে গড়েপিটে নেন। রশিদ বলছেন, ‘সোহাইল হুড়মুড়িয়ে বিশ্বকাপ টিমে ঢুকে পড়েছে। ওর পারফরম্যান্সে নির্বাচকরা বাধ্য হয়েছে ওকে টিমে নিতে। আমি নিশ্চিত, বিশ্বকাপে ওর বোলিং ছাপ ফেলবেই।’ পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে গত মৌসুমে ৬৪ উইকেট পেয়েছেন সোহাইল, যা তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরিয়ে এনেছে প্রায় চার বছর পর। দুটো টেস্ট ও পাঁচটি ওয়ানডেতে সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেননি আগের বার। রশিদের মতো অনেকেই কিন্তু আশা দেখছেন সোহাইলের দ্বিতীয় স্পেলে।