মধ্য এশিয়ায় শক্তি করিডোর স্থাপনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু

SHARE

চীনের আক্রমণাত্মক নীতিমালা মোকাবেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্য এশিয়ায় গণতন্ত্রের নতুন জোট গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। এদিকে বেইজিং মধ্য এশিয়াকে দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্য প্রাচ্যের সাথে সংযুক্ত করে আরো জোরালো সম্ভাব্য নতুন বাণিজ্য ও শক্তি করিডোর যুক্ত করতে শুরু করেছে।

ব্রিটেনে দায়িত্ব পালনরত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মালিহা লোধি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের বরাত দিয়ে সাউথ চায়না মনিটরিং পোস্টকে বলেছেন, ‘বিশ্ব শক্তির কেন্দ্র পশ্চিম থেকে সরে পূর্বের দিকে পরিবর্তিত হচ্ছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়গুলো বেশ চ্যালেঞ্জিং। পরিবর্তনের এই সময়ে বিশ্বজুড়ে মৌলিক পুনরুদ্ধার সংঘটিত হচ্ছে। আমাদের অঞ্চলটিও এর ব্যতিক্রম নয় এবং সম্পর্কের পুনর্নির্বাচনেরও সময়ও এটি।

দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সম্প্রসারণবাদী নীতিমালা মোকাবেলার জন্য আমেরিকা জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের সাথে চতুর্ভুজ জোটের মিশনে রয়েছে।

সম্প্রতি, আফগানিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি জালমি খলিলজাদ প্রথমবারের মতো মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ফিনান্স কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডাম বোহেলারের সঙ্গে কাতার, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নরওয়ে এবং বুলগেরিয়া সফর করেছেন।

সাউথ চায়না মনিটরিং পোস্টের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং পাঁচটি মধ্য এশীয় প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি কাতারে অবস্থানরত তালেবান আলোচকদের সঙ্গেও একাধিক বৈঠকে মিলিত হন খলিলজাদ এবং বোহেলার। সেখানে তারা বার্তাটিই আরো জোরদার করার চেষ্টা করেছিল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রধান অর্থদাতা হিসাবে অব্যাহত ভূমিকার ভিত্তিতে আফগানিস্তানের শীর্ষস্থানীয় ভূ-রাজনৈতিক খেলোয়াড় হিসাবে থাকতে চায়।

১ জুলাই তাশখন্দে মধ্য এশিয়ার মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনার সময় আমেরিকা আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তান ও ভারতের সাথে উজবেকিস্তানকে সংযুক্ত করার জন্য একটি রেল প্রকল্পের তহবিল সাহায্যের প্রস্তাব করেছিল বলে জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু দেশগুলোকে চীনের অর্থায়নের বিকল্প হিসাবে সাহায্য অব্যাহত রেখেছে। সেহেতু বেইজিং দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়া এবং মধ্য প্রাচ্যের সমস্ত বেল্ট এবং সড়ক অংশীদার সরকারগুলোর সাথে আরো গভীর সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপনে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২৭ জুলাই নেপাল ও আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পাকিস্তানের উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে একটি বিরল চতুর্পক্ষীয় ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করে বেইজিং। সেখানে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি তাদের মধ্যে একটি ‘গ্রিন করিডোর’ প্রতিষ্ঠার জন্য দেশগুলোকে করোনা মহামারি মোকাবেলায় সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিলেন।

বৈঠকে ওয়াং একটি মাল্টিমোডাল ট্রান্স হিমালয়ান করিডোরের বিকাশের বিষয়েও আলোচনা করেছেন, যা নেপালকে তিব্বত, জিনজিয়াং এবং গওয়াদার হয়ে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত করবে। তিনি আফগানিস্তানে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিসি) বাড়ানোর বিষয়েও চাপ দিয়েছিলেন। ফলে চীন আফগানিস্তানে তার ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উচ্চাভিলাষকে এগিয়ে নিতে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে। কর্তৃত্ব ধরে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রও চাইছে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে কাছে টানতে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠেছে।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।