ঘুরে ঘুরেও আইসিইউ পাননি চিকিৎসক, শেষে মৃত্যু

SHARE

করোনার উপসর্গ নিয়ে বরিশালের বেসরকারি রাহাত-আনোয়ার হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. আনোয়ার হোসেন মারা গেছেন হারিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ভোর রাত ৩টার দিকে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৫৫ বছর। তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তিনি বরিশালের আধুনিক রাহাত-আনোয়ার হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, বরিশাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এবং বরিশাল থেকে প্রকাশিত দৈনিক বরিশালের আজকালের খবর পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন। তাকে পরিবারিক গোরস্থানে মা মরহুমা হালিমা বেগমের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

ডা. মো. আনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে অ্যাজমায় ভুগছিলেন। গতকাল সোমবারও তার প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালে রোগী দেখেন ডা. আনোয়ার হোসেন। এর আগে রবিবারও তার হাসপাতালে রোগীদের অস্ত্রোপচার করেন তিনি। করোনার প্রকোপ শুরুর পর নগরীর স্বনামধন্য চিকিৎসকরা লাপাত্তা হলেও একদিনের জন্যও রোগী সেবায় পিছপা হননি তিনি। সামনের সারিতে নিজের প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালে রোগীদের সেবা দেন ডা. আনোয়ার।

গত সোমবার সকাল ৮টার দিকে হঠাৎ তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। নির্বিচারে রোগী দেখায় করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন আশঙ্কায় নিজে থেকেই করোনা পরীক্ষার কথা বলেন সহকর্মীদের। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওইদিন বিকেলেই এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়।

রাহাত-আনোয়ার হাসপাতালের পরিচালক অ্যাডভোকেট লস্কর নুরুল হক জানান, অক্সিজেন লাগানো অবস্থায় সোমবার রাতে এ্যাম্বুলেন্সে প্রথমে তাকে ঢাকার এ্যাপোলো, পরে স্কয়ার এবং আনোয়ার খান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে আইসিইউ সুবিধা না পাওয়ায় রাত ৩টার দিকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর বাড্ডা এলাকার এএমসি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ততক্ষণে না ফেরার দেশে চলে যান ডা. আনোয়ার হোসেন।

আজকালের খবর পত্রিকার বার্তা সম্পাদক খান স্বপন জানান, ঢাকায় হাসপাতাল খুঁজতে খুঁজতে এ্যাম্বুলেন্সের অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়। অক্সিজেনের অভাবে মারা যায় ডা. মো. আনোয়ার হোসেন। ডা. আনোয়ার করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন বলে নিজে থেকেই তার সন্দেহ ছিল। তবে তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।

গতকাল তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। এছাড়া তার পরিবারের সদস্য ও তার সংস্পর্শে যাওয়া ব্যক্তিদের নমুনাও সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন।