ফ্লয়েড হত্যা : বিক্ষোভে সমর্থন বুশ-ক্লিনটন-জিমি কার্টার ও ওবামার

SHARE

পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক ও সাবেক বাস্কেট বল তারকা জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ড ঘিরে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে পুরো যুক্তরাষ্ট্র। গত সাতদিন ধরে চলা আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন দেশটির সাবেক চার প্রেসিডেন্ট। বারাক ওবামা, বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লিউ বুশের পর বুধবার বিবৃতি দিয়েছেন জিমি কার্টার।

নিষ্ঠুর ওই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে চলা ব্যাপক বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়েছে তাঁরা সবাই। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টদের মধ্যে এই চারজনই কেবল বেঁচে রয়েছেন। তারা প্রত্যেকেই ফ্লয়েড হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন।

স্থানীয় সময় বুধবার দেওয়া এক বিবৃতিতে জিমি কার্টারের পক্ষে দ্য কার্টার সেন্টার থেকে বলা হয়েছে, ‘নির্মম বর্ণ বৈষম্য ও তার ফলশ্রুতিতে গত কয়েকদিন ধরে যা হচ্ছে তা সত্যিই বেদনাদায়ক।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘আমাদের জনগণ যেমন ভালো, তেমনই ভালো একটি সরকার প্রয়োজন আমাদের।’ ভুক্তভোগীর পরিবার ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছেন তাদের প্রশংসা করলেও সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট কার্টার। তিনি বলেছেন, ‘হিংসা দিয়ে সমস্যা সমাধান করা যায় না।’

এর আগে মঙ্গলবার আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ফ্লয়েড হত্যার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন। দুই দশক আগে তিনি আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। সাবেক ফার্স্ট লেডি লরা বুশের সঙ্গে দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে জর্জ বুশ বলেন, ‘ফ্লয়েড হত্যার ঘটনায় তাঁরা উদ্বিগ্ন। এ ছাড়া যে ন্যায়বিচারহীন ও ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতেও তারা চিন্তিত।

বিবৃতিতে জর্জ বুশ ও লরা বুশ বলেন, ‘এখন লেকচার দেওয়ার সময় নয়। এখন জনগণের কথা শোনার সময়। আমেরিকার নির্মম ব্যর্থতাগুলো ঠিক কোথায় তা পরীক্ষা করে দেখার সময় এখন।’

শনিবার এক বিবৃতিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন বলেন, ‘কেউই ফ্লয়েডের মতো মৃত্যু প্রত্যাশা করে না। তবে সত্য এটাই যে, আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের শ্বেতাঙ্গ নাগরিক হতেন, তাহলে আপনার সে সম্ভাবনাও কম থাকত।’ ক্লিনটন প্রশ্ন তোলেন, ‘ফ্লয়েড শ্বেতাঙ্গ হলে কি আজ বেঁচে থাকতেন? এমনটা কেন ঘটছে?’

বুধবার এক অনলাইন বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বসুরি বারাক ওবামা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবাদের যে ঝড় উঠেছে তা যেন ‘প্রকৃত পরিবর্তনের’ হাতিয়ার হয়ে ওঠে। এর আগে সোমবার মিডিয়ামে প্রকাশিত এক নিবন্ধে ওবামা লিখেছিলেন, ন্যায়সঙ্গত ক্ষোভকে শান্তিপূর্ণ, টেকসই ও কার্যকর উপায়ে পরিচালিত করতে পারলে তা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের জন্য ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হতে পারে।

২৫ মে মিনিয়াপোলিসে পুলিশের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড। প্রকাশ্যে শহরের রাস্তায় গলায় হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে ফ্লয়েডকে হত্যা করেন এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ। এই ঘটনার প্রতিবাদে আমেরিকাজুড়ে বিক্ষোভ ও অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভ থামাতে অধিকাংশ শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। কারফিউ ভেঙে চলছে বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ।

সূত্র- এবিসি নিউজ।